Skip to content

 

মোটাতাজাকরণ গরুর সুষম খাদ্য তৈরি উপাদার সমূহ কি? রাফেজ আঁশযুক্ত খাদ্য এর গুরুত্ব কি? দানাদার খাদ্যে সরাসরি ইউরিয়া ব্যবহার করার নিয়ম কি?

মোটাতাজাকরণ গরুর সুষম খাদ্য তৈরি উপাদার সমূহ কি? রাফেজ আঁশযুক্ত খাদ্য এর গুরুত্ব কি? দানাদার খাদ্যে সরাসরি ইউরিয়া ব্যবহার করার নিয়ম কি?

হ্যালো খামারিয়ান ক্লাবের বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালোই আছেন, আজকে আমি আলোচনা করব:

✔মোটাতাজাকরণ গরুর সুষম খাদ্য তৈরি উপাদার সমূহ কি?

✔গরু মোটাতাজাকরণ করতে  রাফেজ আঁশযুক্ত খাদ্য এর গুরুত্ব কি?

✔দানাদার খাদ্যে সরাসরি ইউরিয়া ব্যবহার করার নিয়ম কি?

এই ৩টি বিষয় নিয়ে, তো চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

গরু মোটাতাজাকরণ গরুর সুষম খাদ্য তৈরি উপাদার সমূহঃ

১) কাঁচা ঘাসঃ

গবাদিপশুকে উচ্চমান সম্পন্ন কাঁচা ঘাস ১০-১৫ কেজি খাওয়াতে হবে। এতে গবাদিপশুর পুষ্টি চাহিদা অনেকটাই পূরণ হবে।

২) খড়ঃ

গবাদিপশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণে ৩ থেকে ৪ কেজি খড় খেতে দিতে হবে।

৩) প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্যঃ

গবাদিপশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণে ১৮%-২০% প্রোটিন সমৃদ্ধ দানাদার খাদ্যের মিশ্রন সরবরাহ করতে হবে। গবাদিপশুর দানাদার খাদ্যের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার ডাল জাতীয় শস্যদানা ও শস্যদানার উপজাত রয়েছে যেমন- গমের ভুসি, খৈল, চালের কুঁড়া, ডালের ভুসি ইত্যাদি।

৪) আঁশ জাতীয় খাদ্যঃ

গবাদিপশুর শুষ্ক আঁশ জাতীয় খাদ্যে শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ পানি বা জলীয় অংশ থাকে যেমনঃ বিভিন্ন প্রকার খড়। রসালো আঁশ জাতীয় খাদ্যে শতকরা ৭০ থেকে ৮৫ ভাগ পানি বা জলীয় অংশ থাকে যেমনঃ বিভিন্ন গাছের পাতা, মাসকলাই, খেসারী, কাঁচা ঘাস, লতাগুল্ম ইত্যাদি।

৫) ফিড সাপ্লিমেন্ট/প্রিমিক্সঃ

গবাদিপশুর ফিড সাপ্লিমেন্ট ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স, এমানো এসিড, অর্গানিক এসিড, এনজাইম ইত্যাদি।

৬) খনিজ উপাদানঃ

গবাদিপশুর খাদ্যের খনিজ উপাদান হচ্ছে লবন, রক সল্ট, লাইমস্টোন, মনো-ক্যালসিয়াম ফসফেট, ডাই-ক্যালসিয়াম ফসফেট ইত্যাদি।

গরু মোটাতাজাকরণ গরুর রাফেজ আঁশযুক্ত খাদ্য এর গুরুত্বঃ

মোটাতাজাকরণ গরুকে তার চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত রাফেজ বা আঁশযুক্ত খাদ্য অবশ্যই দিতে হবে।

কিছু কিছু খামারি মনে করে খর, বিছালি বা কাচা ঘাস কম খাইয়ে দানাদার খাবার বেশি খাইয়ে গরুকে দ্রুত মোটাতাজাকরণ করা সম্ভব। কিন্তু আসলে তা সঠিক নয়। কখনো কখনো প্রচুর ঔষধ -পত্র প্রয়োগ করে হয়তো সম্ভব কিন্তু এতে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি পড়ে।

গরুর চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট পাকস্থলী কে ইংরেজিতে রুমেন বলা হয়। আর এধরনের প্রাণীদের বলা হয় রুমিনান্ট। সকল রুমিনান্টস তথা গরুর রুমেন তৈরিই হয়েছে আঁশ বা রাফেজ জাতীয় খাদ্যের জন্য। গরু বা ছাগল পর্যাপ্ত আঁশ জাতীয় খাবার না খেলে রুমেনে হজমে সমস্যা হয়।

গরু মোটাতাজাকরণ খাদ্যতে পর্যাপ্ত ফাইবার বা আঁশের অভাব থাকলে নিম্নোক্ত সমস্যার সৃষ্টি হয়।

  • পেটে এসিডিটি তৈরি হয়।
  • হজম ক্ষমতা কমে যায়।
  • খাদ্যে অরুচি দেখা দেয়।
  • গরুর উৎপাদন কমে যায়।
  • ষাড় গরু মোটাতাজা করার নিয়ম

ষাড় গরু মোটাতাজা করার জন্য যা যা করতে হবে।

  • ২ বছর বয়সের ষাড় গরু ক্রয় করতে হবে।
  • গরুর জন্য আরামদায়ক বাসস্থান তৈরি করতে হবে। যে কানে আলো ও বাতাস চলাচলের উত্তম ব্যবস্থা থাকবে।
  • গরুকে পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
  • গরুকে প্রতিদিন শলীর মেজে গোসল করাতে হবে।
  • গরুকে স্টেরয়েড ও হরমোন জাতীয় ঔষধ প্রদান করা থেকে বিরত ধাকতে হবে।

দানাদার খাদ্যে সরাসরি ইউরিয়া ব্যবহারঃ

দানাদার খাদ্যে ইউরিয়া ব্যবহার করে খাদ্যের প্রোটিন মান বৃদ্ধি করা যায়। ১০০ কেজি দৈহিক ওজনের গবাদিপশুর ইউরিয়া মিশ্রিত খাদ্য তালিকা, উপকরণ ও পরিমান।

  • ধানের শুকনো খড় = ২ কেজি
  • সবুজ ঘাস = ২ কেজি (ঘাস না থাকলে ৪ কেজি খড় ব্যবহার করতে হবে)
  • দানদার খাদ্য মিশ্রন = ১.২-২.৫ কেজি
  • ইউরিয়া = ৩৫ গ্রাম
  • চিটাগুড়া বা রাব বা লালি = ২০০-৪০০ গ্রাম
  • লবণ = ২৫ গ্রাম

দানাদার খাদ্যের সাথে লবন, ইউরিয়া, চিটাগুড়, ধানের খড়, কাঁচা ঘাস ছোট ছোট করে কেটে এক সঙ্গে মিশিয়ে দিনে ২ বার এই গরু মোটাতাজাকরণ খাদ্য খাওয়াতে হবে।

আজ এখানেই শেষ করছি, খামারিয়ান ক্লাবে আবারও আলোচনা করব অন্য কোন বিষয় নিয়ে, শেষ অবধি পড়ার অসংখ্য ধন্যবাদ।

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!