Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

মৌমাছির জীবন বৃত্তান্ত ও মৌমাছি সম্পর্কে অজানা তথ্যঃ মৌমাছির কাজ কি? মৌমাছি কি কাজ করে? মৌমাছির আয়ু কত দিন? মৌমাছি কত দিন বাঁচে? মৌমাছি কোথায় যায়? মৌমাছি কয় প্রকার ও কি কি? মৌমাছি এর বৈশিষ্ট্য, মৌমাছির জীবন চক্র

মৌমাছির জীবন বৃত্তান্ত ও মৌমাছি সম্পর্কে অজানা তথ্যঃ মৌমাছির কাজ কি? মৌমাছি কি কাজ করে? মৌমাছির আয়ু কত দিন? মৌমাছি কত দিন বাঁচে? মৌমাছি কোথায় যায়? মৌমাছি কয় প্রকার ও কি কি? মৌমাছি এর বৈশিষ্ট্য, মৌমাছির জীবন চক্র

এই পোষ্টটি পড়লে আমরা জানতে পারব-

মৌমাছি কোথায় যায়? মৌমাছি গড়ে কত দিন বাঁচে? মৌমাছি কি কাজ করে? মৌমাছির আয়ু কত দিন? ফুল ফুটলে মৌমাছি উড়ে আসে কেন? মৌমাছি কয় প্রকার ও কি কি? রানী মৌমাছি চেনার উপায়? মৌমাছি এর বৈশিষ্ট্য? একটি মৌ কলোনি কয়টি রানী মৌমাছি থাকে? একটি রানী মৌমাছি কতবার ডিম পাড়ে? একটি মৌচাকে কয়টি পুরুষ মৌমাছি থাকে? মৌচাকে কোন মৌমাছি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন? মৌমাছি জীবন বৃত্তান্ত।

মৌমাছির পরিচয়ঃ

পৃথিবীতে মোট ৯,৯৯,০০ প্রকারের কীটপতঙ্গ রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের মাছি জাতীয় কীট আছে ২০,০০০ প্রজাতির। মৌমাছির রয়েছে চারটা প্রজাতি। এর মধ্যে আমাদের দেশে তিন জাতের মৌমাছি আছে।

মৌমাছির অঙ্গ প্রত্যঙ্গঃ

মৌমাছির দেহকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা করা যায়। ১. মাথা ২. বুক এবং ৩. তলপেট।

মাথা থেকে বেরুনো আছে এক জোড়া এন্টিনা। পায়ে আছে তিনজোড়া গ্রন্থি আর দুজোড়া ডানা। মৌমাছির শরীরের বাইরের কাঠামো খানিকটা শক্ত। এই শক্ত কাঠামো ভেতরের বিশেষ নরম প্রত্যঙ্গ সমূহকে সুরক্ষিত করে রেখেছে।

মাথার মধ্যে রয়েছে বড় একজোড়া চোখ। ইংরেজিতে এই চোখকে বলে Compound Eyes. এ ছাড়া আছে তিনটা সাধারণ চোখ বা Ocelli, আছে এক জোড়া স্পৰ্শাঙ্গ বা Feelers, এক জোড়া শক্ত চোয়াল এবং আবরণীযুক্ত শোষক জিহ্বা।

বুকের সাথে আটকানো আছে দুজোড়া স্বচ্ছ ডানা এবং তিনজোড়া পা। এবং তলপেটের মধ্যে রয়েছে মূল অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহ। তলপেটটি কয়েকটি Hooplike Segments দ্বারা গঠিত। এ অংশের শেষ মাথায় রয়েছে হুল বা (Sting) এই হুলে থাকে বিষ।

একজন মানুষের ভেতরে যে যে (Organ) অর্গান আছে মৌমাছির দেহের অভ্যন্তরেও আছে সেই সেই অর্গান এবং তাদের প্রত্যেকটির কাজও প্রায় মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মতো। আছে প্রজনন অঙ্গ বা Reproductive Organ. Sense organ. Teste organ ইত্যাদি।

Sense organ হচ্ছে অনুভূতির অঙ্গসমূহ, মৌমাছিদের অনুভূতি এবং দৃষ্টিশক্তি অত্যন্ত বেশি। এদের দেহের বিভিন্ন অংশে চুলের মতো রোয়া থাকে। এ কারণে চুলের শক্তি হয় প্রখর।

মৌমাছিদের স্মৃতিশক্তিও অত্যন্ত প্রখর। নানা জায়গা ঘুরে ঠিক ঠিক ফিরে আসে চাকে। এমনকি যার যার জন্য নির্দিষ্ট জায়গায়। পাশাপাশি অনেকগুলো মৌচাক থাকলেও তারা ভুলেও অন্য মৌচাকে যায় না।

মৌমাছিদের সমাজঃ

মৌমাছিরা অত্যন্ত বেশি সমাজ সচেতন কীট। এরা এক একটি উপনিবেশে (Colony) দলবদ্ধ হয়ে বাস করে। এদের কাজকর্ম করার রয়েছে আশ্চর্য-জনক পদ্ধতি। তাদের কলোনী বা উপনিবেশে তিন ধরনের মৌমাছি রয়েছে।

১। রাণী মৌমাছি,

২। পুরুষ মৌমাছি,

৩। শ্রমিক মৌমাছি।

একটি কলোনীতে শ্রমিক মৌমাছিই থাকে সংখ্যায় সর্বাধিক। প্রায় ত্রিশ হাজারের মতো শ্রমিক মৌমাছি কয়েক শত পুরুষ মৌমাছির আর মাত্র একটা রাণী মৌমাছি নিয়ে হয় এদের একেকটা কলোনী। এই তিন প্রকারের মৌমাছির দৈহিক গঠনে পার্থক্য রয়েছে। রাণী মৌমাছি আকারে সবার চেয়ে বড় হয়।

১. রাণী মৌমাছি

রাণী বা Queen মৌমাছিই স্ত্রী জাতের মৌমাছি। এরা আকারে কলোহনীর অন্যসব সদস্যের চেয়ে বড় হয়্রতিটি কলোনীতে মাত্র একটি রাণী মৌমাছি থাকে। এই রাণী মৌমাছিই হচ্ছে কলোনীর ‘মা’। তিনিই হচ্ছেন ওই গৃহের কর্তা। তাকে ঘিরে কলোনীর জীবনধারা সচল থাকে।

একটি রাণী মৌমাছি ডিম পাড়ে। যে পরিমাণ ডিম সে একদিনে পাড়ে তার ওজন রাণীর ওজনের প্রায় দ্বিগুণ। রাণী মৌমাছি কিন্তু শ্রমিক বা কর্মী মৌমাছিদের মতো হুল ফোটায় না। এরা ২ থেকে ৩ বছর বেঁচে থাকে।

ডিম থেকে একটা লার্ভা মৌমাছি বেরিয়ে আসার পর তা কী ধরনের মৌমাছি হবে তার অনেকটা তার পরিচর্যার উপর নির্ভর করে। লার্ভা বা শুককীট অবস্থায় লার্ভাটি স্ত্রী জাতীয় হলে তাকে তিনদিন পরিপুর্ণ খাবারদেয়া হয় না। পরিপূর্ণ খাবার পেলে কিন্তু সে রাণী মৌমাছিতে পরিণত হতে পারত। তাছাড়া তাকে রাখা হয় শ্রমিকদের কোষে। এর ফলে ওই স্ত্রী লার্ভাটি অপুষ্টিজনিত কারণে শ্রমিক মৌমাছিতে পরিণত হয়।

মজার ব্যাপার হলো যখন রাণী মৌমাছি বৃদ্ধ হয়ে যায়, মরি মরি অবস্থায় কলোনী রক্ষার জন্য তখন নতুন রাণী মৌমাছির প্রয়োজন দেখা দেয়। এ অবস্থায় একটি স্ত্রী লার্ভাকে রাণী রেখে প্রতিপালন করে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশেষ খাবার দেয়া হয়, তবেই ওই লার্ভা পুষ্ট হয়ে বড় আকার ধারণ করে রাণী ৫ থেকে ১০ দিন মধু খেয়ে বেঁচে থাকে। তারপর সে পুরুষ মৌমাছির সাথে মিলিত হয় এবং নতুন কর্তা হিসেবে কলোনী বা চাকে রাণী কক্ষে থাকতে শুরু করে।

See also  আধুনিক পদ্ধতিতে মৌমাছি পালনে মৌমাছিদের কি কি পরিচর্যা করতে হয়? মৌমাছি পালনের পরিবেশ, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ ও শীতকালের পরিচর্যাঃ মৌমাছি ও মধু চাষের মৌমাছি খামারে মৌমাছি পালনের পরিবেশ কেমন হওয়া উচিত?

রাণী মৌমাছির একমাত্র কাজ হচ্ছে ডিম পাড়া। একটা রাণী মৌমাছি তার এক জীবনে এত ডিম পাড়ে যে অন্য কাজ করাও আসলে সম্ভব নয়। সন্তানদের যত্নটুকু সে নিতে পারে না। যত্ন নেয় শ্রমিক মৌমাছিরা। যদিও রাণী মৌমাছি ডিম পাড়া ছাড়া অন্য কোনও কাজ করছে না তবুও কিন্তু সেই কলোনীর সব। রাণী চাক ছেড়ে চলে গেলে অন্যরাও চলে যায়। রাণীকে কেন্দ্র করেই কিন্তু নতুন চাক গড়ে ওঠে।

২. শ্রমিক বা কৰ্মী মৌমাছি

যে সব স্ত্রী লার্ভা অল্প খাদ্য পেয়ে অপুষ্টভাবে শ্রমিক কোষে বেড়ে ওঠে তারাই শ্রমিক মৌমাছিতে পরিণত হয়। এরা ডিম পাড়তে পারে না। তবে এদের কিন্তু মাতৃস্নেহ আছে রাজ্যের কাজ তাদের। এরা পরস্পর কাজ ভাগ করে নেয়। কাজের ভাগটা হয় বয়সের উপর নির্ভর করে।

জীবনের প্রথম অর্ধেকে শ্রমিক মৌমাছিরা ঘরে কাজ করে। যেমন বাচ্চাদের খাওয়ায়, রাণীকে খাওয়ায়, রাণীর পরিচর্যা করে, মোম উৎপাদন করে, চাক তৈরি করে, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। বাতাস যাতায়াতের পথ তৈরি করে। চাক ঠাণ্ডা রাখার ব্যবস্থা করে, চাক পাহারা দেয়, মধুকোষে মধু সঞ্চয় করে রাখার ব্যবস্থাসহ সব রকমের কাজ করে থাকে।

জীবনের শেষ অর্ধেকে শ্রমিক মৌমাছিরা বাইরের কাজ করে থাকে। ফুল থেকে মধু সংগ্রহ, এক প্রকার আঠা এবং পানি আনার কাজ করে থাকে। জীবনের শেষ অর্ধেকে শ্রমিক মৌমাছিরা বাইরের কাজ করে থাকে। ফুল থেকে মধু সংগ্রহ, এক প্রকার আঠা এবং পানি

আনার কাজ করে থাকে। বাইরে কাজে যারা থাকে তারা নিজেদেরকে আবার দুই দলে ভাগ করে নেয়। একদল অনুসন্ধানকারী অন্যদল সংগ্রহকারী।

অনুসন্ধানকারী শ্রমিকেরা ঘুরে ঘুরে খাদ্যের সন্ধান করতে থাকে। সন্ধান পেয়েই জানিয়ে দেয় সংগ্রহকারীদের কোথায় কতূরে কোন দিকে যেতে হবে। সবকিছু ঘুরে ঘুরে নাচের মাধ্যমে জানায়। সাথে খাদ্যের কিছু নমুনা ও গন্ধ বয়ে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে সংগ্রহকারী শ্রমিক মৌমাছিরা দলবেধে ছোটে খাদ্য সংগ্রহের জন্য। যতদিন পর্যন্ত এই জায়গার খাদ্য শেষ না হয় ততদিন তারা সেখান থেকে খাবার আনতে থাকে।

শ্রমিক মৌমাছিরা শুধু নিজেদের স্বার্থে কোনও কাজ করে না। তারা কলোনীর সবার স্বার্থে কাজ করে যায়। সারাক্ষণ তারা ব্যস্ত থাকে কাজ নিয়ে। কাজ আর কাজ। এ ছাড়া যেন অন্য কিছু বোঝে না। কাজ করতে করতেই প্রাণ ত্যাগ করে এরা। বড় চামচের এক চামচ মধু সংগ্রহ করতে একটি শ্রমিক মৌমাছির সারাজীবন লেগে যায়।

একটি শ্রমিক মৌমাছি বেঁচে থাকে মাত্র ৬ সপ্তাহ।

মৌমাছিদের মধু সংগ্রহের কাল বসন্তকাল ও শরৎকাল তারা প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকে। শীতকালে মৌমাছিরা খানিক অবসরে থাকে। এসময় তাদের তেমন কাজ থাকে না। আর কাজ না থাকার কারণে তারা একটি মৌমাছি ৬ মাসের মতো বাঁচে।

আমাদের দেশের একটা মৌমাছির গড় আয়ু ৫০ দিন। শ্রমিক মৌমাছিরা কারও দ্বারা আক্রান্ত হলে হুল ফুটিয়ে প্রতিরক্ষা করে।

৩. পুরুষ মৌমাছি

পুরুষ মৌমাছিদের একমাত্র কাজ হচ্ছে প্রজনন কাজে সহযোগিতা। জীবনে একবার মাত্র রাণী মৌমাছির সাথে পুরুষ মৌমাছি মিলিত হয়। এর পরপরই তার মৃত্যু হয়। তবে সকল পুরুষ মৌমাছিই রাণী মৌমাছির সাথে মিলিত হতে পারে না। বহু মৌমাছির মধ্যে মাত্র একটা পুরুষ মৌমাছি রাণীর সাথে মিলিত হতে পারে।

পুরুষ মৌমাছিরা নিজেদের খাদ্য নিজেরা সংগ্রহ করতে পারে না। একটা পুরুষ মৌমাছির খাবার জোগাড় করতে ৩ থেকে ৪টি শ্রমিক মৌমাছির শ্রমের প্রয়োজন হয়। খাদ্য সংগ্রহের জন্য এরা বের না হলেও মাঝে মাঝে মুক্ত হওয়া ও রোদ পোহাবার জন্য ঘুরে বেড়ায়।

বসন্ত ও শীতকালে মধু সংগ্রহ করে বেশি তাই এসময় পুরুষ মৌমাছিদের যত্ন আত্মি হয় ভালো। তবে মধুর অকালের মাস বর্ষা আর শীতে পুরুষ মৌমাছিদের শ্রমিক মৌমাছিরা সহ্য করে না। অসময় বসে বসে বেশি বেশি খাবে তা কি হয়, তখন তারা তাদের কলোনী থেকে তাড়িয়ে দেয়। এর ফলে তারা না খেতে পেয়ে মারা যায়।

একটি পুরুষ মৌমাছির স্বাভাবিক আয়ু ৫০ থেকে ৬০ দিন। পুরুষ মৌমাছিদের কোনও হুল থাকে না।

মৌমাছিদের কাজ কি?

মৌমাছি কি কাজ করেঃ

সারা বছর ধরেই মৌমাছিরা ব্যস্ত থাকে কাজ নিয়ে। তবে প্রকট শীত পড়লে ওরা বাইরের কাজ বন্ধ করে দেয়। তাছাড়া কখনও কখনও অধিক বাচ্চার যত্ন নিতে গিয়েও কাজে বিঘ্ন ঘটে। কাজ না থাকার সময় তারা চাকের ওপর আচ্ছাদন করে বসে থাকে। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত চাকে মৌমাছির সংখ্যা অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এসময় দলবদ্ধভাবে চাক ত্যাগ করে অনেক মৌমাছি। চাক ছাড়ার আগে দরকার হয় নতুন রাণীর। নতুন রাণী সৃষ্টির জন্য বানানো হয় রাণী কোষ। নতুন রাণীর কোষ থেকে যখন বেরুনোর সময় হয় তখন বৃদ্ধা রাণী বিভিন্ন বয়সের কিছু শ্রমিক মৌমাছিদের নিয়ে চাক ত্যাগ করে। তারা রাণীর নেতৃত্বে ছুটে চলে অজানার পথে। নতুন কোনও জায়গার সন্ধানে।

See also  কিভাবে মৌমাছি চাষ করা যায়? (মৌমাছি চাষের উপকরণ সহ বর্ণনা) আধুনিক পদ্ধতিতে মৌমাছি পালন ও বাংলাদেশ মৌমাছি চাষ পদ্ধতি #মৌমাছি খামার

উড়তে উড়তে এক সময় রাণী দলবল নিয়ে কোনও গাছের ডালে বিশ্রাম নেয়। এসময় একদল স্কাউটকে নতুন স্থান নির্বাচনের জন্য পাঠানো হয়। স্কাউটদের সুবিধা মতো জায়গা গাছের ডাল, দালানের কার্নিশ যা তারা নির্বাচন করে, বৃদ্ধা রাণী সেখানে চলে আসে দলবলসহ। সেখানে গড়ে তোলে নতুন কলোনী।

বৃদ্ধা রাণী উড়ে যাবার পর পুরনো কলোনীতে দুরকমের ঘটনা ঘটে থাকে। নতুন রাণী অন্য বাচ্চা রাণীদের মেরে ফেলে নিজেই কলোনীর একক কর্ত্রী হয়। অথবা নতুন রাণীও অন্য মৌমাছিদের নিয়ে পুরনো কলোনী ত্যাগ করে। তখন চাকে মাত্র দুযেকটা মৌমাছি থাকে। কোষ থেকে অন্য রাণী বেরয় এবং সে-ই একক আধিপত্য বিস্তার করে। ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়ার প্রবণতা শেষ হওয়ার পর কলোনীতে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়। তখন মধু সংগ্রহ হয় অনেক তবে খরচ হয় কম। এর ফলে মধু সঞ্চিত হতে থাকে বেশি। এখন খাদ্য বেশি কিন্তু খাদক কম। এজন্য পুরনো মৌচাকে মধুর স্টক থাকে বেশি।

মৌচাকে কোনও কোনও ক্ষেত্রে দুই রাণীর দেখা পেয়েছেন মৌমাছি বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে বৃদ্ধ রাণী এবং নতুন রাণী কিছুদিন একত্রে বাস করে। তারা দুজনে মিলে কলোনী পরিচালনা করে। যদি কোনও দুর্ঘটনার কারণে রাণী মৌমাছি অন্য রাণী না রেখেই মারা যায় এবং রাণী কোষেও যদি কোনও রাণী না থাকে তাহলে মৌচাকটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এ সময় কিছু শ্রমিক মৌমাছিদের শূককীটকে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাইয়ে রাণী তৈরির চেষ্টা চালায়। কিন্তু এভাবে সৃষ্ট রাণী পুরুষ মৌমাছির সাথে মিলিত হওয়ার পর যে ডিম পাড়ে তা হয় অনুর্বর এ অবস্থায় কলোনীটি আর টিকে থাকে না। ২/৩ মাসের মধ্যেই তা বিনষ্ট হয়।

মৌমাছি কোথায় যায়? মৌমাছি গড়ে কত দিন বাঁচে? মৌমাছি কি কাজ করে? মৌমাছির আয়ু কত দিন? ফুল ফুটলে মৌমাছি উড়ে আসে কেন? মৌমাছি কয় প্রকার ও কি কি? রানী মৌমাছি চেনার উপায়? মৌমাছি এর বৈশিষ্ট্য? একটি মৌ কলোনি কয়টি রানী মৌমাছি থাকে? একটি রানী মৌমাছি কতবার ডিম পাড়ে? একটি মৌচাকে কয়টি পুরুষ মৌমাছি থাকে? মৌচাকে কোন মৌমাছি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন? মৌমাছি জীবন বৃত্তান্ত।

ডিম থেকে মৌমাছিঃ

ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মৌমাছিতে পরিণত হতে ৪টি পর্যায় অতিক্রম করতে হয় ৷ রাণী মৌমাছি প্রথমে কোষে কোষে প্রথমে ছোট ছোট সাদা ডিম পাড়ে। ডিম দেখতে ঠিক কৃমির মতো। খাদ্য এবং পরিচর্যার ফলে ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মৌমাছিতে পরিণতি লাভ করে।

শূককীট থেকে মূককীটে পরিণত হওয়ার সময় শ্রমিক মৌমাছিরা প্রতিটি কোষের ওপর পাতলা মোরে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দেয়। শূককীট থেকে মূককীটে পরিণত হওয়ার জন্য কয়েকদিন বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। মূককীট দেখতে অনেকটা পূর্ণাঙ্গ মৌমাছির মতো।

ডিম অবস্থায় তেমন বিশেষ পরিচর্যার দরকার হয় না। শূককীট পর্যায় থেকে খাদ্য খাওয়ানো প্রয়োজন হয়। শূককীটকে পরিচর্যাকারী শ্রমিক মৌমাছি তাদের মাথার একটি Gland (গ্ল্যান্ড) থেকে Royal Jelly ক্ষরণ করে। তারা এই রয়েল জেলি শূককীটকে তিনদিন পর্যন্ত খাওয়ায়। তাদের এই খাদ্য সরবরাহের উপরই নির্ভর করে শূককীট ভবিষ্যতে রাণী না শ্রমিক বা পুরুষ মৌমাছি হবে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সরবরাহ করলে স্ত্রী জাতীয় মৌমাছি হৃষ্টপুষ্ট হয়ে রাণী মৌমাছিতে পরিণত হবে আর আবার কম দিলে তারা রোগা ধরনের হয়ে শ্রমিক মৌমাছিতে পরিণত হবে। মূককীটকে মোমের জেলি দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পর আর তেমন কোনও যত্ন নেয়ার প্রয়োজন হয় না। স্বাভাবিকভাবেই তারা মূককীট পর্যায় অতিক্রম করে নিজেরাই ঢাকনা খুলে পূর্ণাঙ্গ মৌমাছিতে পরিণত হয়ে বেরিয়ে আসে। ঢাকনা খুলে বেরুনোর পর তাদের আর কোনও সেবার প্রয়োজন হয় না। তখন নিজেই নিজের খাবার সংগ্রহে তৎপর হয়।

মৌমাছি কোথায় যায়? মৌমাছি গড়ে কত দিন বাঁচে? মৌমাছি কি কাজ করে? মৌমাছির আয়ু কত দিন? ফুল ফুটলে মৌমাছি উড়ে আসে কেন? মৌমাছি কয় প্রকার ও কি কি? রানী মৌমাছি চেনার উপায়? মৌমাছি এর বৈশিষ্ট্য? একটি মৌ কলোনি কয়টি রানী মৌমাছি থাকে? একটি রানী মৌমাছি কতবার ডিম পাড়ে? একটি মৌচাকে কয়টি পুরুষ মৌমাছি থাকে? মৌচাকে কোন মৌমাছি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন? মৌমাছি জীবন বৃত্তান্ত।

প্রাকৃতিক মৌচাকঃ

মোম দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের কুঠুরীই হচ্ছে মৌমাছিদের কলোনী বা চাক। গাছের ডালে, কোটরে, বাড়ির ছাদে মৌচাক দেখা যায়। নতুন বাসা চাকের মোমের মতোই সাদা হয়ে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে চাকের রঙ কালো হয়ে যায়। চাকের ভেতরে থাকে অসংখ্য কোষ। এইসব কোষে মৌমাছিরা মধু এবং পরাগ সংগ্রহ করে রাখে। বহু কোষ আছে মৌমাছির বাচ্চা রাখার জন্য।

সাধারণত চাকের একেবারের উপরের অংশ অর্থাৎ যে অংশ গাছের সাথে যুক্ত থাকে ওই অংশের শেষগুলিতে মৌমাছিরা মধু সঞ্চয় করে রাখে। ওই অংশকে মধু কোষ (Honey Cells) বলে। এর ঠিক নীচের কোষগুলিতে সঞ্চয় করে রাখে পরাগ। ওই অংশের নাম পরাগ কোষ। পরাগ কোষের নীচে আছে শ্রমিক বা কর্মী কোষ। তার নীচে পুরুষ কোষ। একেবারে নীচে চাকের বাইরের প্রান্তে রাণী কোষ থাকে। কৃত্রিমভাবে মৌবাক্স তৈরি করতেও এরকম উপর নিচের বিভাগ ভাগ করা হয়।

মধু আহরণের বিশেষ মৌসুমে অন্য কোষগুলিতেও মধু সঞ্চয় করা হয়। তবে সচরাচর উপরের কোষেই মধু সঞ্চয় করা হয়। যে সকল কোষে মধু সঞ্চয় করে রাখা-সেই কোষগুলো পূর্ণ হয়ে গেলে বায়ুনিরোধ ঢাকনা দিয়ে আবদ্ধ রাখা হয়। এই ঢাকানাগুলো সমতল ধরনের হয়ে থাকে। যেসব কোষে পরাগ জমানো হয় সেগুলো কিন্তু ঢাকনা বন্ধ থাকে না। পরাগ ও মোম জমিয়ে রাখা হয়।

See also  মধু এবং মোমঃ মধুর রাসায়নিক উপাদান, পুষ্টিকর খাদ্য হিসাবে মধু, ওষুধ হিসেবে মধুর ব্যবহার, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ও অন্যবিধাভাবে মধু, বিশুদ্ধ বা পরিশোধিত মধু পেতে হলে- মধু শোধন পদ্ধতি, মধু সংরক্ষণ ব্যবস্থা ও মধুর মান, মৌচাকের মোমের বিভিন্ন ব্যবহার, চাক থেকে মোম তৈরির পদ্ধতি
মৌমাছির জীবন বৃত্তান্ত ও মৌমাছি সম্পর্কে অজানা তথ্যঃ মৌমাছির কাজ কি? মৌমাছি কি কাজ করে? মৌমাছির আয়ু কত দিন? মৌমাছি কত দিন বাঁচে? মৌমাছি কোথায় যায়? মৌমাছি কয় প্রকার ও কি কি? মৌমাছি এর বৈশিষ্ট্য, মৌমাছির জীবন চক্র

মৌমাছি ও মৌমছি চাষের ইতিহাসঃ

যখনকার ইতিহাস আমাদের কারোর জানা নেই সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে মানুষের, পরিচয় মৌমাছি আর মধুর সাথে। পৃথিবীর সবচেয়ে মিষ্টি বস্তু মধু। মধু আহরিত হয় মৌচাক থেকে। মৌমাছিরা সরাসরি মানুষের উপকার করে থাকে। ধর্মগ্রন্থ কোরআন, বেদ, রামায়ণসহ বিভিন্ন প্রাচীন পুঁথিপত্রে মৌমাছির কথা উল্লেখ আছে।

প্রাচীনকালে মৌচাক থেকে সংগ্রহ করা মধু মোম রাজকর এবং উপহার হিসেবে গ্রহণ করা হতো। সে সময় বন্ধুত্ব করার শুরুতে বন্ধুকে এক বোতল মধু উপহার দেয়ার রীতি ছিল তাছাড়া ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মধুর ব্যবহার হতো। খাদ্য ও ঔষধ হিসেবে মধুর ব্যবহার এখনও বর্তমান মৌচাক থেকে সংগ্রহ করা মোমেরও তখন ছিল বিশেষ কদর।

মৌমাছিদের ধারাবাহিক ধারাবাহিক পরিশ্রম, একতা, আত্মত্যাগ এবং সবাই সমান কাজ করার যে গুণ তা মানুষের জীবনে অনুকরণ করার মতো। এক ফোটা মধু সংগ্রহের জন্য একটা শ্রমিক মৌমাছিকে কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ ফুলে চরে বেড়াতে হয়। আমরা এখানে প্রতিপালন সম্পর্কে আলোচনা করব।

অর্থনৈতিক দিক থেকে মৌমাছি পালন বিশেষ লাভজনক। ফুলে ফুলে পরাগায়নের মাধ্যমে ফলের যে উৎপাদন তাতেও মৌমাছিদের বিশেষ অবদান রয়েছে। এক সময় দুনিয়া জুড়ে মৌমাছি পালনের যে পদ্ধতি ছিল, তা ছিল খুবই নিষ্ঠুর পদ্ধতি। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে উন্নত বিশ্বে মৌমাছি পালনের নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। আমাদের দেশে ১৮৮৩ সালে প্রথম বিজ্ঞান সম্মতভাবে কাঠের ফ্রেমে মৌমাছি পালনের প্রচেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু নানারকম সমস্যার কারণে ওই ব্যবস্থা তখন তেমন এগোয়নি।

উপমহাদেশের ১৯১১ সালে রেভাঃ নিউটন বহু যুবকদের মৌমাছির পালনের প্রশিক্ষণ দেন। তিনি মৌমাছি পালনের জন্য কাঠের ‘মৌ বাক্স’ তৈরি করেন। কিন্তু গ্রাম বাংলার মানুষ এই পদ্ধতিতে মৌমাছি পালন করতে যুগ যুগ ধরেও যেন অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারছিল না। তবে আশার কথা অতি সম্প্রতি মৌৗমাছি পালন করা বাঙালীর আদর্শ শখে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের ‘বিসিক’ গ্রামের বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মৌমাছি পালনের অগ্রাহী করে তুলেছে। এজন্য তাদের ঋণ দেয়া হচ্ছে। দেয়া হচ্ছে মৌবাক্স ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি। এই অবস্থায় মৌমাছি চাষে সবাইএগিয়ে এলে তা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

মৌমাছি পালন এখন আদর্শ হবি বা শখ। খুব কম সময়ে সামান্য পুঁজি বিনিয়োগ করে অর্থ ও আনন্দ দুই-ই লাভ করা যায়। আনন্দের কথা হচ্ছে একবার যারা মৌমাছি চাষ শুরু করেছে তারা কিন্তু আর থেমে থাকেনি। যার একটা বাক্স দিয়ে শুরু, কিছুদিনের তার দুটো, তিনটে, পাঁচটা, দশটা পর্যন্ত মৌবাক্স হয়ে যাচ্ছে।

মৌমাছি আমাদের দেশের সম্পদ। ফুলে পরাগায়নের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন এবং মধু উৎপাদনে এদের ভূমিকা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশে ফসলের ক্ষেতে, বাগানে অসংখ্য মধুভরা ফুলের সমারোহ। কিন্তু প্রকৃতির দেয়া অসামান্য অবদান এই ফুলের মধু কেবলমাত্র সংগ্রহের অভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। আমরা যদি একটু সচেষ্ট হই তবে প্রকৃতির দান এই মধু অনায়াসে গ্রহণ করতে পারি।

বিজ্ঞান সম্মতভাবে মৌমাছি পালন এবং মধু সংগ্রহ করলে আমরা অর্থনৈতিকভাবেও দারুণ লাভবান হতে পরি খুবই অল্প মূলধন বিনিয়োগ করে মৌমাছি পালন শুরু করা যায়। ২০১৮ সালে, মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা খরচ করে একটা মৌবাক্স ও যাবতীয় সরঞ্জামাদি তৈরি করা যায়। একটা মৌবাক্স ১৯/২০ বছর ব্যবহার করা যায়। তাই একবার কিনলে ২০ বছরের মধ্যে আর কোনও খরচ নেই। ১০টা মৌবাক্স বসিয়ে বছরে ১২, ২০,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!