Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

মৎস্য সংরক্ষণ আইন কি, কেন ও এই আইনের উল্লেখযোগ্য বিধিসমূহ, মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে প্রচলিত আইন, পুকুর উন্নয়ন আইন এর বিধানমালা (বাংলাদেশ)#মাছ চাষের নিয়ম

সংরক্ষণ আইন ও পুকুর উন্নয়ন আইন এর বিধানমালা

বিষয়: পুকুর উন্নয়ন আইন এর বিধানমালা (বাংলাদেশ) মৎস্য সংরক্ষণ আইন কি, কেন ও এই আইনের উল্লেখযোগ্য বিধিসমূহ, মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে প্রচলিত আইন, মাছ চাষের নিয়ম।
হ্যাশট্যাগ:#মৎস্য সংরক্ষণ আইন এর বিধিমালা#পুকুর উন্নয়ন আইন এর বিধানমালা#মাছ চাষের নিয়ম।

বাংলাদেশের পুকুর দীঘি, খাল-বিল, হাওড় ও নদী-নালা অতীতে একসময় মৎস্যসমৃদ্ধ ছিল। সুদূর অতীতকাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক জলাশয় থেকে পর্যাপ্ত মাছ শুধু ধরে খাওয়া হতো। কিন্তু জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক, ও মানুষ সৃষ্ট নানাবিধ কারণে দেশে মাছের প্রকট অভাব দেখা দিয়েছে।

উৎপাদন, বৃদ্ধির লক্ষে আভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে যে পোনা মাছ ছাড়া হচ্ছে, যদি সেগুলোকে খাওয়া বা বিক্রির উপযুক্ত নির্দিষ্ট আকার পর্যন্ত বড় হওয়ার সুযোগ না দেওয়া হয়, তবে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়।

জৈব ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ এবং সুষ্ঠু সংরক্ষণের মাধ্যমে মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন সহজেই কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব। এতে দেশের মাছের চাহিদা সম্পূর্ণ মিটিয়ে প্রচুর রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে।

বিরাজমান এসব সমস্যা সমাধান করে মৎস্য সম্পদের প্রাচুর্যের গুরুত্ব, চাহিদার যোগান এবং প্রাপ্যতা ইত্যাদি সহনশীল পর্যায়ে রাখার জন্য ১৯৫০ সালে “মৎস্য সংরক্ষণ আইন-১৯৫০” প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে অধিকতর যুগোপযোগী করার জন্য ১৯৮২, ১৯৮৫, ১৯৮৭, ১৯৮৮, ও ১৯৯৫ সালে এ আইনের কিছু ধারা সংশোধন, সংযোজন এবং সংযুক্ত বিধিমালা প্রণয়ণ করা হয়।

বাংলাদেশ এর মৎস্য সংরক্ষণ আইনের উল্লেখযোগ্য বিধিসমূহ

  1. এ আইন মাছ বলতে সকল মাছ, চিংড়ি, উভয়চর প্রাণী, সরীসৃপ, সন্ধীপদ ও খোলসযুক্ত প্রাণী এবং ব্যাঙের জীবনচক্রের সকল ধাপকে বুঝাবে। নদী-নালা, খাল-বিলে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে অথবা জাল বা মাছ ধরার অন্য উপকরণ স্থায়ীভাবে পেতে মাছ ধরা বা মাছের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত করা যাবে না।
  2. বিস্ফোরক, বন্দুক বা তীর-ধনকু ব্যবহার করে মাছ শিকার বা আহরণ নিষিদ্ধ। পানিতে বিষ প্রয়োগ, কল-কারাখানার আবর্জনা নিক্ষেপ বা অন্য কোনো উপায়ে পানি দূষণ করে মাছের আবাসস্থল বা প্রজনন ক্ষেত্রের ক্ষতিসাধন বা ধ্বংস করা নিষিদ্ধ।
  3. ১ এপ্রিল থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত মুক্ত জলাশয়ে শোল, গজার, টাকি মাছের পোনা যখন ঝাঁক বেঁধে বিচরণ করে তখন এসব পোনা ও এদের সাথে বিচরণরত বয়স্ক মাছ ধরা নিষিদ্ধ
  4. ১৫ মার্চ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রজনন মৌসুমে নির্দিষ্ট কিছু খাল-বিল ও নদ-নদীতে যে কোনো আকারে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউস, ঘনিয়া মাছ ধরা নিষিদ্ধ।
  5. চাষের উদ্দেশ্য ব্যতীত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৩ সেন্টিমিটারের ছোট আকারের রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউস এবং ঘনিয়া মাছ ধরা পরিবহণ, হস্তান্তর, বিক্রয় বা নিজস্ব এখতিয়ারে রাখা নিষিদ্ধ।
  6. চাষের উদ্দেশ্য ব্যতীত নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ২৩ সেন্টিমিটারের ছোট আকারের ইলিশ (জাটকা) ও পাংগাস মাছ ধরা পরিবহণ, হস্তান্তর, বিক্রয় বা নিজস্ব এখতিয়ারে রাখা নিষিদ্ধ।
  7. চাষের উদ্দেশ্য ব্যতীত ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৩০ সেন্টিমিটারের ছোট আকারের শিলন, বোয়াল, আইশ মাছ ধরা, পরিবহণ, হস্তান্তর, বিক্রয় বা নিজস্ব এখতিয়ারে রাখা নিষিদ্ধ।
  8. জীবিত বা মৃত ব্যাঙ ধরা, পরিবহণ, হস্তান্তর, বিক্রয় বা নিজস্ব এখতিয়ারে রাখা নিষিদ্ধ।
  9. ৪.৫ সেন্টিমিটার বা তার চেয়ে কম ব্যাস বা দৈর্ঘ্যের ফাঁস বিশিষ্ট কারেন্ট জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ।
  10. এ আইন অমান্যকারী প্রথম অপরাধের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ মাসের জেল থেকে সর্বোচ্চ ৬ মাসের জেল বা ১০০০.০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। পুনরায় অভিযুক্ত হলে পরবর্তী প্রতিবারের জন্য ১ বছরের জেল বা ২০০০.০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
  11. এ আইনের আওতায় সরল বিশ্বাসে গৃহীত কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না।
See also  পুকুরে মাছ চাষের নিয়ম, মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্তুতি, পুকুরে মাছ চাষের পদ্ধতি, পুকুরে মাছ চাষ করার উপায়, পুকুরে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ

মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে প্রচলিত আইন

মৎস্য সংরক্ষণ আইন ছাড়াও মাছ চাষ বৃদ্ধি ও মৎস্য সম্পদের যথাযথ উন্নয়নের জন্য দেশে অন্য কয়েকটি আইন প্রচলিত আছে। যেমন-

১. পুকুর উন্নয়ন আইন ১৯৩৯।

২. সামুদ্রিক মৎস্য আইন ১৯৮৩।

৩. মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ১৯৮৯।

৪. চিংড়ি চাষ অভিকর আইন ১৯৯২।

পুকুর উন্নয়ন আইন এর বিধানমালা

দেশে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১৩ লক্ষ পুকুর আছে। এগুলো থেকে বছরে মাত্র ২ লক্ষ টন মাছ উৎপাদিত হয়। সকল পুকুর চাষের আওতায় এনে সঠিকভাবে মাছ চাষ করলে এ উৎপাদন ৪-৫ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। এ লক্ষ নিয়েই পুকুর উন্নয়ন আইন প্রণয়ন করা হয় ৷ পুকুর উন্নয়ন আইন ১৯৩৯ (১৯৮৬ সালে সংশোধিত) এর বিধানমালা নিম্নরূপ-

  1. কোনো জলাশয় পতিত রাখা হলে উক্ত জলাশয়ের মালিককে নোটিশ প্রদান করে সেই জলাশয় উন্নয়নের জন্য নির্দেশ জারী করা যাবে।
  2. নির্ধারিত সময়ে জলাশয়ের উন্নয়ন করা না হলে উক্ত জলাশয় পতিত হিসেবে ঘোষণা করা যাবে।
  3. পতিত জলাশয় অধিগ্রহণ করে তা উন্নয়ন করা যাবে কিংবা তা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি অথবা অন্য কোনো আগ্রহী ব্যক্তির নিকট দখল হস্তান্তর করে উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে।
  4. আবেদনক্রমে অধিগ্রহণকৃত পতিত জলাশয়, জলাশয় মালিক কিংবা অংশীদারকে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তরযোগ্য।
  5. পতিত জলাশয় উন্নয়নের জন্য তৎসন্নিহিত ভূমি অধিগ্রহণযোগ্য।
  6. অধিগ্রহণকৃত এবং উন্নয়নের জন্য হস্তান্তরিত পতিত জলাশয়ের উন্নয়ন কার্য যথাসময়ে সম্পন্ন না হলে হস্তান্তর বাতিলযোগ্য।
  7. অধিগ্রহণকৃত জলাশয় সর্বোচ্চ ২০ বছর মেয়াদে হস্তান্তরযোগ্য। সন্নিহিত ভূমি হস্তান্তরের মেয়াদ পতিত জলাশয় হস্তান্তরের মেয়াদের সমান হবে।
  8. হস্তান্তর গ্রহীতা নির্ধারিত ভাড়া জলাশয় মালিককে প্রদানে বাধ্য থাকবেন। হস্তান্তর গ্রহীতা ক্ষেত্রবিশেষ ক্ষতিপুরণ প্রদানে বাধ্য থাকবেন।
  9. হস্তান্তর গ্রহীতার অনুমতি ব্যতীত অন্য কেউ সংশ্লিষ্ট জলাশয় ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না।
  10. হস্তান্তর গ্রহীতা হস্তান্তরের মেয়াদবর্তী সময়ে অনুমোদনক্রমে এ আইনের উদ্দেশ্য সাধনে গৃহীত জলাশয় অন্য কাউকে ইজারা দিতে পারবেন। কিন্তু হস্তান্তর গ্রহীতা কোনোভাবে সংশ্লিষ্ট জলাশয়ের দখলীস্বত্ব অন্য কারো নিকট হস্তান্তর করতে পারবেন না।
  11. হস্তান্তর গ্রহীতা জলাশয় ও তৎসন্নিহিত ভূমির যথাযথ ব্যবস্থাপনা করতে বাধ্য থাকবেন।
  12. হস্তান্তর মেয়াদ শেষে মূল মালিক সংশ্লিষ্ট জলাশয় ও ভূমির দখল ফেরত পাবেন।
  13. হস্তান্তরকালীন সময়ে কোনো সিভিল্ স্যুট প্রযোজ্য হবে না।
  14. এ আইন ভঙ্গ করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!