বিষয়: ইসলামের আলোকে রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি।
হ্যাশট্যাগ: ইসলামের আলোকে রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি।
রাজনীতি করা ও রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়ার বিধান
* দ্বীনের হেফাজত ও ইসলামী শাসন ব্যবস্থা সংরক্ষণের জন্য সাধ্য থাকলে ইসলামী খেলাফত স্থাপন তথা খলীফা/ইমাম/আমীরুল মু’মিনীন নিযুক্ত করা ফরযে কেফায়া। কোন খলীফা/ইমাম/আমীরুল মু’মিনীন না থাকলে আলেম, বুদ্ধিমান ও কর্তৃপক্ষীয় লোকগণ সাধ্য থাকলে অনতিবিলম্বে খলীফা নিযুক্ত করবেন এবং খলীফা হওয়ার যোগ্য কোন ব্যক্তি এ দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য নিজেকে পেশ করবেন। কোন একজন খলীফা/ইমাম নিযুক্ত হয়ে গেলে সকলেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি লাভ করবেন। আর কাউকেই দায়িত্বশীল না বানালে সকলেই দায়ী হবেন।
* ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যম হিসেবে এবং ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে রাজনীতি করা হলে সেরূপ রাজনীতি করাও ফরযে কেফায়া হবে। অন্ততঃ কিছু লোক এ দায়িত্ব পালন না করলে সকলেই দায়ী থাকবেন। তবে রাজনীতি করতে গিয়ে নিজের দ্বীন ও ঈমান বাঁচানো সম্ভব না হলে সেরূপ রাজনীতি থেকে বিরত থাকাই জরুরী। কেননা রাজনীতি মূল উদ্দেশ্য নয় – মূল উদ্দেশ্য হল দ্বীন ও ঈমান আমল।
* আলেম নন-এরূপ লোকদের নেতৃত্বে পরিচালিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দের কর্তব্য হল উলামায়ে কেরাম থেকে দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ গ্রহণ করে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা এবং উলামায়ে কেরামের দায়িত্ব হলো তাদেরকে রাহনুমায়ী করা। তবে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ যদি উলামায়ে কেরামের রাহনুমায়ীতে পরিচালিত না হন সেরূপ ক্ষেত্রে সহীহ রাজনীতি করার জন্য বা-হিম্মত (সাহসী) উলামায়ে কেরামকে এগিয়ে আসতে হবে।
( حکیم الامت حضرت تھانوی کے سیاسی افکار والعلم والعلماء)
* যে সব রাজনৈতিক দল ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য নয় বরং ক্ষমতার মোহে বা পার্থিব কোন স্বার্থে কিংবা কুফ্র প্রতিষ্ঠার জন্য পরিচালিত হয় তাতে যোগদান করা বা তাদের সহযোগিতা করা জায়েয নয়।
হরতাল ও অবরোধ সম্পর্কিত বিধি-বিধান
* হরতাল ও অবরোধ ডাকা জায়েয কি না, এ সম্পর্কে সাম্প্রতিক কালের উলামায়ে কেরামের মধ্যে দুটো মত লক্ষ্য করা যায়। কেউ কেউ শর্ত সাপেক্ষে হরতাল অবরোধ ডাকা জায়েয বলতে চান। তাদের বক্তব্য হলঃ
* জনগণ যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল অবরোধ পালন করে এবং অবরোধ পালন করার সময় কারও জান-মালের ক্ষতি সাধন করা না হয়, তাহলে এরূপ হরতাল অবরোধ ডাকা অবৈধ হওয়ার কোন কারণ নেই।
* উলামায়ে কেরামের অপর একপক্ষ হরতাল অবরোধ ডাকা জায়েয নয় বলে মত পোষণ করেন। তারা বলেন, সাধারণতঃ নির্দিষ্ট কোন হরতাল অবরোধের ব্যাপারে সমস্ত জনগণ একমত হয় না এবং একমত না হওয়া সত্ত্বেও জানমাল ও ইজ্জত আব্রুর ভয়ে হরতাল পালন করতে হয় অর্থাৎ, অনিচ্ছা সত্ত্বেও গাড়ী ঘোড়া, দোকান-পাঠ ও যানবাহন বন্ধ রাখতে হয় এবং এতে করে বহু লোকের আয় উপার্জন বন্ধ থাকায় তাদেরকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এভাবে কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যেহেতু জায়েয নয়, অতএব যে হরতালের কারণে এটা হয় তাও অনিবার্য কারণেই নাজায়েয হবে।
* আমাদের সমাজে হরতাল অবরোধের ডাক দেয়া হলে স্বাভাবিক ভাবেই জোর পূর্বক সকলকে হরতাল মানতে বাধ্য করা হয়, অন্যথায় জান-মাল ও ইজ্জত আব্রুর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়, জ্বালাও পোড়াও এবং ভাঙ্গচূরের সম্মুখীন হতে হয়। এ হল সমাজের প্রচিলত অবস্থা। আর ফতওয়া হয়ে থাকে প্রচলিত অবস্থার আলোকেই। অতএব ফতওয়ার নীতি হিসেবে হরতাল অবরোধ সম্পর্কে শেষোক্ত মতটিই গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়।
* হরতালের সময় কারও জান-মালের ক্ষতি সাধন করা বা ইজ্জত আব্রুর হানি করা হারাম ও কবীরা গোনাহ।
* জোরপূর্বক কাউকে হরতাল মানতে বাধ্য করা বা অবরোধ করা তার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার নামান্তর। আর এভাবে কারও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা জায়েয নয়। অন্যায় করবে একজন, আর সেই অন্যায়ের প্রতিবাদের নামে অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে, এটা শরী ‘আতের নীতি হতে পারে না।
অনশন ধর্মঘট প্রসঙ্গ
* রাজনৈতিক কর্মসূচী হিসেবে হোক বা এমনিতেই কোন দাবী-দাওয়া আদায়ের উদ্দেশ্যে হোক, অনশন ধর্মঘট করা শরী’আত সম্মত নয়। অনশন ধর্মঘট আৱহত্যার সমার্থবোধক। এভাবে মৃত্যু হলে হারাম মৃত্যু হবে এবং আৱহত্যার পাপ হবে।
সরকারের আনুগত্য বা সরকার উৎখাতের আন্দোলন সম্পর্কে বিধি-বিধান
* যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার/রাষ্ট্রপ্রধান কোন পাপ কাজের জন্য বাধ্য না করে ততক্ষণ পর্যন্ত তার আনুগত্য করা ওয়াজিব। কোন পাপ কাজে তার আনুগত্য করা যাবে না।
* সরকার/রাষ্ট্রপ্রধান কোন পাপ কাজের জন্য জনগণকে বাধ্য না করলে তাকে উৎখাতের জন্য আন্দোলন করা বৈধ নয়। তবে ধর্মের প্রতি তাচ্ছিল্য এবং পাপ প্রীতির কারণে কোন পাপ কাজের জন্য বাধ্য করলে তাকে উৎখাতের জন্য আন্দোলন করা বৈধ এই শর্তে যে, উৎখাতকারীগণ সরকার/রাষ্ট্রপ্রধানকে উৎখাত করার পর দেশ ও দেশের শাসন ব্যবস্থাকে সুসংহত রাখতে সক্ষম হবেন।
বিবদমান পক্ষসমূহের যা যা করণীয় ও যা যা বর্জনীয়
* মানুষে মানুষে বা দলে দলের মধ্যে মতানৈক্য, মত বিরোধ বা বিবাদ প্রায়শঃই ঘটে থাকে এবং সাধারণতঃ এরূপ ক্ষেত্রে প্রত্যেক পক্ষই কিছু বাড়াবাড়ি করে ফেলেন ও ব্যালেন্স হারিয়ে বসেন। ফলে যা করার তা বর্জন করেন এবং যা বর্জন করার তা করে বসেন। এ জাতীয় ক্ষেত্রে প্রত্যেক পক্ষেরই নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মান্য করা উচিত-
১. প্রতিপক্ষের বক্তব্য, তাদের যুক্তি প্রমাণ ও তাদের অবস্থানকে সত্যিকারভাবে না বুঝেই তাদের প্রতি বদগোমানী করা অন্যায়। এরূপ না করা উচিত।
২. এরূপ ক্ষেত্রে অনেক কথাই সত্য মিথ্যা মিশ্রিত হয়ে বা অতিরঞ্জিত হয়ে কানে এসে থাকে। তাই নির্ভরযোগ্য মাধ্যম ছাড়া কোন কিছু কানে আসলে তাহকীক তদন্ত করা ব্যতীত তা বিশ্বাস না করা উচিত এবং তাহকীক তদন্ত ব্যতীত সে ব্যাপারে মুখ খোলা অনুচিত। অন্যথায় অনেক সময় পরবর্তীতে অনুতপ্ত হতে হয়।
৩. প্রতিপক্ষের সমালোচনা ও প্রতিপক্ষের ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে ব্যালেন্স= রক্ষা করে চলা উচিত- লাগামহীন হওয়া ঠিক নয়। যাতে পরবর্তীতে দুপক্ষের মধ্যে মিল মহব্বত হয়ে গেলে অতীতের কর্মকাণ্ড বা অতীতের অতিরঞ্জিত বক্তব্য স্মরণ করে লজ্জিত হতে না হয়। জবান সংযত না রাখা অনেক ক্ষেত্রেই পরবর্তীতে লজ্জিত হওয়ার কারণ ঘটে।
৪. প্রতিপক্ষের ভালকে ভাল বলার উদারতা থাকা চাই। তাদের ভালকেও বিকৃত করে দেখা উচিত নয়।
৫. অন্য যে কেউ কোন দোষ করলে সেটার জন্য প্রতিপক্ষকে অভিযুক্ত করে তাদেরকে ঘায়েল করার অপচেষ্টা একটা জঘন্য মনোবৃত্তি এবং মিথ্যাচারের শামিল বিধায় তা মহাপাপ।
৬. এরূপ ক্ষেত্রে দেখা যায়, একপক্ষের সকলেই অন্যপক্ষের সকলের ব্যাপারে সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেন এবং প্রতিপক্ষের সকলের ব্যাপারে বেধড়ক মন্তব্য শুরু করেন। এটা লক্ষ্য করা হয় না যে, আমি প্রতিপক্ষের যার ব্যাপারে মুখ খুলছি তিনি আমার চেয়ে জ্ঞানে, গুণে, আমল আখলাকে অনেক উর্ধ্বে, আমি তার সমপর্যায়ের নই। অতএব তার ব্যাপারে আমার মুখ খোলা শোভা পায় না। তার ব্যাপারে তিনিই মুখ খুলতে পারেন যিনি তার সমপর্যায়ের। তবে হ্যাঁ স্পষ্টতঃই কেউ কোন অন্যায় করলে তার বিরোধিতা করতে হবে, তাই তিনি বড়ই হোন না কেন। তবে তিনি উস্তাদ/গুরুজন হলে এবং বিরোধিতা করার প্রয়োজন হলে আদব রক্ষাপূর্বক বিরোধিতা করতে হবে।
বিবাদ নিরসন ও ঐক্য সংহতি সৃষ্টির জন্য যা যা করণীয়
* কয়েকজন বা কয়েক পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে সে ক্ষেত্রে কেউ বা কোন পক্ষ যদি স্পষ্টতঃ কুরআন সুন্নাহ্-র উপর এবং ন্যায়ের উপর আর অন্যজন বা অন্যপক্ষ স্পষ্টতঃ কুরআন সুন্নাহ্-র বিপক্ষে এবং অন্যায়ে থাকেন, তাহলে তাদের মধ্যে ঐক্য সংহতি সৃষ্টির একটাই মাত্র পদ্ধতি, আর তা হল যিনি বা যে পক্ষ কুরআন সুন্নাহ্-র বিরুদ্ধে রয়েছেন। তিনি বা সে পক্ষ নিজের মত পরিত্যাগ করে কুরআন-সুন্নাকে গ্রহণ করবেন। আর মতবিরোধ যদি ইজতিহাদগত বিষয়কে কেন্দ্র করে বা পারস্পরিক ভুল বুঝাবুঝির দরুণ হয়ে থাকে, তাহলে সেরূপ ক্ষেত্রে পারষ্পরিক ঐক্য সংহতি সৃষ্টির জন্য নিম্নোক্ত পদ্ধতিসমূহ গ্রহণ করতে হবে।
১. উভয়পক্ষকেই তাওয়াযু’ বা বিনয় অবলম্বন করতে হবে এবং অহংকার বর্জন করতে হবে। অন্যথায় নিজের মত পরিত্যাগ করা সম্ভব হবে না এবং ঐক্যও সৃষ্টি হবে না। কোন এক পক্ষ যদি গোঁ ধরেন বা অন্যের মত মেনে নিতে তার অহংকার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে তাদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি হতে পারে না।
২. বিবদমান লোক বা পক্ষসমূহের মধ্যে আপোষ ও ঐক্য সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য উভয় পক্ষের নিকট গ্রহণযোগ্য একজন যোগ্য সালিশ বা তৃতীয় ব্যক্তিকে নিযুক্ত করতে হবে, যিনি সকল পক্ষের বক্তব্য, সকল পক্ষের দলীল যুক্তি শুনবেন এবং সকল পক্ষের প্রকৃত অবস্থান অনুধাবন করবেন, তারপর যে পক্ষের অবস্থানকে অধিকতর সঠিক মনে করবেন তাদের অনুকূলে অন্যপক্ষকে মানার জন্য উদ্বুদ্ধ করবেন এবং সে পক্ষ তা যেনে নিবে।
৩. উভয়পক্ষের মধ্যে যে বিষয় নিয়ে কোন বিরোধ নেই তাকে কেন্দ্র করে ঐক্য গড়ে উঠতে পারে, যদি তাতে শরী’আতের বিধিবদ্ধ কোন বিষয় পরিত্যাগ করা অপরিহার্য হয়ে না দাঁড়ায়।
নির্বাচনে পদপ্রার্থী হওয়া সম্পর্কে শরীয়তের বিধান
* সাধারণ ভাবে নির্বাচনে পদপ্রার্থী হওয়া বা কোন পদের জন্য নিজে দাঁড়নো জায়েয নয়-মাকরূহ। তবে নিম্নোক্ত শর্তাবলী সাপেক্ষে বিশেষ কোন পদ চাওয়া ও তার জন্য নিজেকে পেশ করা জায়েয। শর্তগুলো এইঃ
১. যদি বিশেষ কোন পদ সম্পর্কে জানা থাকে যে, অন্য কোন ব্যক্তি এর সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে সক্ষম হবে না এবং নিজে ভালরূপে তা সম্পাদন করতে পারবে বলে দৃঢ় আৱবিশ্বাস থাকে।
২. যদি উক্ত পদে গিয়ে কোন গোনাহে লিপ্ত হওয়ার আশংকা না থাকে।
৩. যদি প্রভাব-প্রতিপত্তি ও অর্থকড়ির মোহে না হয় বরং জনগণের বিশুদ্ধ সেবা ও ইনসাফের সাথে তাদের অধিকার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে পদ চাওয়া হয়।
বিঃ দ্রঃ মানুষের উচিত যোগ্য ও সৎলোক জানা থাকলে তাকে ডেকে এনে পদ দান করা।
ভোটের ক্যানভ্যাস ও নির্বাচনী প্রচারকার্য সম্পর্কে বিধি-বিধান
* অসৎ ও অবিশ্বস্ত লোক এবং যাদের জন্য পদপ্রার্থী হওয়া বৈধ নয়। তাদের পক্ষে কারও থেকে ভোট দেয়ার ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি নেয়া দুরস্ত নয়। এরূপ ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি দেয়াও উচিত নয়। ভুলবশতঃ বা লজ্জায় পড়ে বা চাপের মুখে ওয়াদা দিয়ে থাকলেও সে ওয়াদা পালন করা উচিত নয়। তবে দেশের কোন দ্বীনদার ও প্রভাবশালী ব্যক্তি যদি তার ভোট কোন যোগ্য ও বিশ্বস্ত লোককে দেয়ার কথা প্রকাশ করেন এবং তার অনুসরণ করে অন্য লোকও সেদিকে ঝুঁকে পড়ে, তাহলে এরূপ ক্ষেত্রে যোগ্য ও বিশ্বস্ত লোককে ভোট দেয়ার জন্য মত প্রকাশ করা উচিত।
* মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া হারাম ও গোনাহে কবীরা। অতএব অযোগ্য ও অসৎ প্রার্থীর পক্ষে প্রচার করতে গিয়ে তাকে যোগ্য ও সৎ বলে প্রচার করা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার শামিল হিসেবে গোনাহে কবীরা ও হারাম।
* জালেম ও ফাসেকের প্রশংসা করা গোনাহে কবীরা এবং পাপ কাজে উদ্বুদ্ধ করা গোনাহে কবীরা। অতএব নির্বাচন প্রার্থী যদি ফাসেক বা জালেম হয়, তাহলে প্রচারকালে তার প্রশংসা করাও গোনাহে কবীরা হবে। প্রার্থী যদি এমন হয় যাকে ভোট দেয়া অন্যায়, তাহলে তার পক্ষে প্রচার করাও অন্যায় কাজে উদ্বুদ্ধ করার শামিল এবং গোনাহে কবীরা হবে।
* নিজের প্রশংসা নিজে করা গোনাহে কবীরা। অতএব নির্বাচনী প্রচারকালে নিজের প্রশংসা নিজে করলে গোনাহে কবীরা হবে। তবে কারও অন্যায় অভিযোগ থেকে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে নিজের সঠিক অবস্থানকে মানুষের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে বা মানুষকে ভাল কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করার প্রয়োজনে যদি নিজের কোন ভাল বিষয়কে তুলে ধরা হয় তাহলে তার অনুমতি রয়েছে।
* নির্বাচনী প্রচার উপলক্ষে বক্তৃতা বিবৃতি দিতে গিয়ে প্রায়শঃই অন্য প্রার্থীদের দোষ চর্চা বা গীবত করা হয়ে থাকে। মনে রাখতে হবে রাজনৈতিক দোষ চর্চাও গীবতের অন্তর্ভুক্ত এবং গীবত করা হারাম ও কবীরা গোনাহ। তবে সত্যি সত্যিই কেউ যদি কাউকে হেয় করার উদ্দেশ্যে বা কাউকে হেয় করে নিজেকে বড় করে দেখানোর বা অহংকার প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে নয় বরং মানুষকে কারও সম্পর্কে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে তার সামনে অন্যের দোষের কথা আলোচনা করে, তাতে পাপ হবে না। তবে মনে রাখতে হবে, মনের গোপনতম কথাও আল্লাহ জানেন-আল্লাহর কাছে কোন লুকোচুরি চলবে না।
ভোট প্রদান সম্পর্কে শরী’আতের বিধান
১. যদি ইসলামের দাবী এবং জনগণের ন্যায্য দাবী পেশ করার বিশ্বস্ত, যোগ্য একজন মাত্র লোক থাকেন এবং তিনি কোন অনৈসলামিক দলভুক্ত না হন, তাহলে তাকে প্রতিনিধিত্বের পদে বরণ করে নেয়ার জন্য ভোট দেয়া ওয়াজিব।
২. যদি অনুরূপ একাধিক ব্যক্তি পাওয়া যায়, তাহলে যিনি অধিক ইসলাম দরদী, অধিক গরীব দরদী হবেন তাকে সমর্থন করা মোস্তাহাব।
৩. আত্মীয়তার খাতিরে বা দলপুষ্টির খাতিরে বা দেশী খেশী হওয়ার খাতিরে অযোগ্য, অসৎ বা দুর্নীতি পরায়ণ বা ধর্মদ্রোহীকে প্রতিনিধিত্বের পদের জন্য ভোট দেয়া মহাপাপ-হারাম।
৪. যদি কেউ একবার অবিশ্বস্ত প্রমাণিত হয়ে থাকে অথচ আগামীতে বিশ্বস্ত দলভুক্ত হয়ে বিশ্বস্ত থাকার অঙ্গীকার করে এবং তার চেয়ে অধিক বিশ্বস্ত লোক পাওয়া না যায় তাহলে তাকে ভোট দেয়া মাকরূহ।
৫. যদি কারও অবিশ্বস্ত হওয়া প্রমাণিত না হয়ে থাকে অথচ সে বিশ্বস্ত থাকার অঙ্গীকার করে এবং তার চেয়ে অধিক বিশ্বস্ত বলে প্রমাণিত লোক মওজুদ না থাকে, তাহলে তাকে ভোট দেয়া মোবাহ।
৬. অসৎ, অবিশ্বস্ত লোককে ভোট দেয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দেয়া উচিত নয়। ভুলবশতঃ বা লজ্জায় পড়ে বা চাপে পড়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকলেও সে প্রতিশ্রুতি পালন করা উচিত নয়।
৭. যারা ভোটপ্রার্থী হয়েছে তাদের মধ্যে যদি কাউকে বিশ্বস্ত, ধার্মিক সৎকর্মী বলে অনুমিত না হয় এবং ইসলাম ও কুফুরে মোকাবিলা না হয় তাহলে কাউকেই ভোট না দিয়ে ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকা উচিত। ভোটটাকে কেন নষ্ট করব? এই যুক্তিতে অপাত্রে ভোট দেয়া উচিত নয়। কেননা এরূপ ক্ষেত্রে ভোট না দিলে পাপ হবে না, পক্ষান্তরে সে ভোটের দ্বারা জয়ী হয়ে গেলে সে জনগণের রক্ত শোষণ, ইসলামী শরী’আতের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে আইন পাশ ইত্যাদি করে যত পাপ অর্জন করবে, তাকে ভোট প্রদানকারীগণও সে পাপের অংশীদার হবে।
৮. ইসলামের পক্ষ থেকে দাবী তুলে ধরার মত যোগ্য প্রার্থী আছে, কিন্তু তার একার কথায় কোন কাজ হবে না এ কথাও জানা আছে, এরূপ ক্ষেত্রেও তাকে সমর্থন করতে হবে, সে জয়ী হতে পারবে না- মনে হলেও। হকের সমর্থনের স্বার্থে, হকের আওয়াজ যেন মরে না যায় এ স্বার্থে তাকে সমর্থন করতে হবে। তার বিপক্ষে যাওয়া হারাম হবে।
৯. কোন প্রার্থী যদি এমন হন যিনি ব্যক্তিগত ভাবে সৎ ও দ্বীনদার, কিন্তু তিনি এমন একটি দলের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যে দল ইসলাম বিরোধী আইন পাশ করেছে বা করার প্রবল আশংকা আছে, যেহেতু তাদের দলে শরী’আত মান্যতার কোন বাধ্যবাধকতা নেই বা শরী’আত বিরোধিতারও কোন নিষেধ নেই, এরূপ সৎ লোককেও ভোট দেয়া জায়েয নয়।
১০.যারা সাধারণতঃ ভোট আদায়ের সময় টাকা পয়সা ছড়িয়ে, দাওয়াত যিয়াফত খাইয়ে, স্কুল মসজিদ মাদ্রাসায় দান সাহায্য করে ভোট আদায় করে থাকে, তারা সাধারণতঃ যত টাকা ব্যয় করে তার চেয়ে বেশীগুণ জাতীয় সম্পদ খেয়ানত করে আদায় করার উদ্দেশ্যে করে থাকে, এরূপ প্রার্থীকে সমর্থন করা জায়েয নয়। এরূপ ক্ষেত্রে সমর্থনকারীগণ আমানতের খেয়ানতকারীদের দলভুক্ত হবে এবং পাপী হবে।
(হযরত মাওলানা শামসুল হক ফরীদপুরী রচিত “ভোটারের দায়িত্ব ও ভোট সম্পর্কে শরীয়তের নির্দেশ” গ্রন্থ থেকে গৃহীত।)
খলীফা/রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্ব ও কর্তব্য
খলীফা/রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব ও কর্তব্য মৌলিকভাবে দশটি যথাঃ
১. শরী‘আতের প্রতিষ্ঠিত নীতি ও পূর্বসূরীদের ঐক্যমত অনুসারে দ্বীনের হেফাজত করা, বিদআত প্রতিহত করা, ফরয ওয়াজিবের উপর মানুষকে টিকিয়ে রাখা ও নিষিদ্ধ বিষয় থেকে সকলকে দূরে রাখা।
২. বিবদমান লোকদের মধ্যে ইনসাফের সাথে ফয়সালা করে দেয়া।
৩. রাষ্ট্রের সংরক্ষণ করা এবং মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করা।
৪. রাষ্ট্রের সীমানা সংরক্ষণ করা এবং সীমান্ত প্রহরার ব্যবস্থা করা, যাতে সীমান্তের বাইরে থেকে কেউ অনুপ্রবেশ করে দেশের লোকদের জান- মালের ক্ষতিসাধন করতে না পারে।
৫. শরী’আত নির্ধারিত হুদূদ বা শাস্তির বিধানাবলী যথাযথভাবে প্রয়োগ করা।
৬. ইসলামের দাওয়াত প্রদান করা। দাওয়াত গ্রহণ না করলে ইসলামের জেহাদের নীতি অনুসারে জেহাদ পরিচালনা করা।
৭. কোনরূপ জুলুম অবিচার না করে শরী’আতের বিধান ও ফেকাহর মাসায়েল অনুসারে খারাজ (রাজস্ব/খাজনা/ট্যাক্স) ও যাকাত উসূল করা।
৮. বায়তুল মাল বা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন ভাতা নির্ধারণ করা এবং যথাযথভাবে (প্রয়োজনের চেয়ে কমও নয় বেশীও নয়) নির্দিষ্ট সময়ে তা পরিশোধ করা।
৯. দ্বীনদার, আমানতদার, যোগ্য ও নির্ভরযোগ্য লোকদেরকে মন্ত্রী, গভর্ণর, প্রতিনিধি ইত্যাদি দায়িত্বশীল পদে নিযুক্ত করা।
১০. নিজে সমস্ত রাজ্যের সবকিছুর তত্ত্বাবধান করা এবং খোঁজ-খবর রাখা।
কোন পদে লোক নিয়োগের নীতিমাল
কোন পদে লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানতঃ যে যে নীতিমালা রয়েছে তা নিম্নরূপ :
১. যে পদের জন্য লোক নিযোগ করা হবে, সে পদের দায়িত্ব পালন করার মত প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও বিদ্যা তার মধ্যে থাকতে হবে।
২. যাকে যে পদের জন্য নিয়োগ করা হবে তার মধ্যে উক্ত পদের দায়িত্ব পালন করার মত আমানতদারী ও সততা থাকতে হবে।
৩. উক্ত পদের জন্য যে সব শর্ত ও যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে তার মধ্যে সেসব শর্ত ও যোগ্যতা বিদ্যমান থাকতে হবে। যেমন কোন কোন পদের জন্য পুরুষ হওয়া শর্ত, কোন কোন পদের জন্য আলেম হওয়া শর্ত, কোন কোন পদের জন্য বিচক্ষণতা ও ইজতেহাদের ক্ষমতা থাকা আবশ্যক ইত্যাদি।
৪. শ্রমের সময়, পারিশ্রমিক ও বেতন-ভাতা ইত্যাদি নির্ধারিত হওয়া আবশ্যক।
৫. চাকুরি এক ধরনের লেন-দেন, অতএব বাকীতে লেনদেনের বিষয়ের ন্যায় চাকরি সংক্রান্ত বিষয়েরও একটি লিখিত চুক্তিনামা থাকা উত্তম।
৬. যোগ্যতা ও শর্তাবলী পূরণ হওয়ার ভিত্তিতে কোন আপনজন বা আত্মীয়কে নিয়োগ প্রদান করা স্বজনপ্রীতি ও অন্যায় নয়। যোগ্যতা ও শর্তাবলীর দিকটাকে উপেক্ষা করে নিছক আত্মীয়তার বা আপনজন হওয়ার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া অন্যায়।
অমুসলিম রাষ্ট্রে সরকারী পদ গ্রহণ সম্পর্কে বিধান
* কারও অধীনে পদ গ্রহণ করা তাকে সাহায্য সহযোগিতা করারই নামান্তর। আর অমুসলিমকে যেহেতু সাহায্য সহযোগিতা করা অবৈধ, তাই সাধারণ ভাবে অমুসলিম/কাফের সরকারের অধীনে সরকারী পদ গ্রহণ করা জায়েয নয়। তবে নিম্নোক্ত শর্তাবলী পাওয়া গেলে অমুসলিম/কাফের সরকারের অধীনে সরকারী পদ গ্রহণ করা জায়েযঃ
১. যদি এমন হয় যে, উক্ত পদ গ্রহণ না করলে জনগণের অধিকার খর্ব হওয়ার অথবা নিজের অত্যাচার উৎপীড়নের শিকার হওয়ার আশংকা রয়েছে আর উক্ত সরকারকে উৎখাত করারও ক্ষমতা নেই।
২. যদি এরূপ বোঝা যায় যে, সে সরকার তাকে শরী’আত বিরোধী কোন আইন জারী করতে বা মান্য করতে বাধ্য করবে না।
কয়েকটি বিশেষ রাষ্ট্রনীতি
* অন্যান্য ক্ষেত্রের ন্যায় রাষ্ট্রনীতিতেও মিথ্যা এবং ধোকার আশ্রয় গ্রহণ করা হারাম।
* ইসলাম সরকার-নির্বাচনের জন্য কোন পদ্ধতি নির্দিষ্ট করে দেয়নি। তবে হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদীনের আমল থেকে কয়েকটি নমুনা পাওয়া যায়। যথাঃ
১. খলীফা/রাষ্ট্রপ্রধান পরবর্তী খলীফা/রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের বিষয়টি উম্মতের উপর ছেড়ে দিয়ে যাবেন। যেমন হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর ক্ষেত্রে করা হয়েছিল।
২. খলীফা/রাষ্ট্রপ্রধান পরবর্তী খলীফা/রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট নির্বাচকমণ্ডলী নির্ধারণ করে যাবেন। যেমন হযরত ওমর (রাঃ) করে গিয়ে ছিলেন।
৩. খলীফা/রাষ্ট্রপ্রধান পরবর্তী খলীফা/রাষ্ট্রপ্রধানের নাম ঘোষণা করে যাবেন। যেমন হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বিশিষ্ট্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মাশওয়ারা পূর্বক হযরত ওমর (রাঃ)-এর নাম ঘোষণা করে যান।
* জনগণের মতের ভিত্তিতে খলীফা/রাষ্ট্রপ্রধান নিযুক্ত করতে হলে এ ব্যাপারে ইসলাম দায়িত্বজ্ঞানশীল ও বিশ্বস্ত লোকদের মত গ্রহণের পক্ষপাতী। ইসলাম দায়িত্বজ্ঞানহীন, অবিশ্বস্ত, বিক্রিত বা বিকৃতদের মত গ্রহণের পক্ষপাতী নয়।
* ইসলামের দৃষ্টিতে সার্বভৌমত্ব আল্লাহর, জনগণ বা সর্বহারাদের নয়।
* ইসলামের দৃষ্টিতে আইনের উৎস আল্লাহ, জনগণ নয়। ইসলাম মানুষকে আইন প্রণয়নের অধিকার দেয়নি। তবে যার মূলধারা কুরআন সুন্নায় বর্ণিত হয়েছে কিন্তু উপধারা বর্ণিত হয়নি-এরূপ ক্ষেত্রে দায়িত্ব জ্ঞানশীল ইজতেহাদের ক্ষমতা সম্পন্ন আলেমদেরকে আইনের উপধারা রচনা করার অধিকার দিয়েছে। কিন্তু সে উপধারা সমূহের ঠধষরফ হওয়ার জন্য প্রধান শর্ত এই যে, কুরআন সুন্নাহর খেলাফ যেন না হয়। সারকথা ইসলাম জনগণকে Final authoity বা Sovereign power বলে বিশ্বাস করে না।
* কুরআন সুন্নাহর কোন ধারাকে ৯৯% ভোটের দ্বারাও বাতিল করা যাবেনা।
* রাষ্ট্র পরিচালিত হবে মাশওয়ারা বা পরামর্শের ভিত্তিতে- কারও একক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নয়।
মাশওয়ারা বা পরামর্শ বিষয়ক নীতিমালা
* যে ব্যাপারে কুরআন সুন্নায় স্পষ্ট বিধান বর্ণিত নেই বা যে সব বিষয় করতেই হবে তা নয়- এমন সব বিষয়ে নীতি নির্ধারণ ও কর্মপদ্ধতি গ্রহণের ক্ষেত্রে মাশওয়ারা বা পরামর্শ করে নেয়া সুন্নাত।
* মাশওয়ারা শুরু করার পূর্বে এই দু’আ পড়ে নিবে-
اللهم الهمنا مراشد أمورنا وأعذنا من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا ۔
অর্থঃ হে আল্লাহ, সঠিক বিষয়টি আমাদের অন্তরে উদিত করে দাও এবং আমাদের নসের ধোঁকা ও কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আমাদেরকে রক্ষা কর।
* মাশওয়ারা মজলিসে একজন আমীর বা মাশওয়ারা শেষে সিদ্ধান্ত প্রদানকারী থাকতে হবে।
* মত সংগ্রহের বেলায় ইসলাম দায়িত্বজ্ঞানশীল বিশ্বস্তদের মত গ্রহণের পক্ষপাতী। তবে নিয়মতান্ত্রিক মাশওয়ারা গ্রহণের মত যোগ্য ব্যক্তি না থাকলে বা নিয়মতান্ত্রিক বড়রা না থাকলেও ছোট এবং সঙ্গীদের থেকে মাশওয়ারা গ্রহণও ফায়দা থেকে খালি নয়।
* মাশওয়ারা বা পরামর্শ ও মত প্রদানকারীকে কুরআন হাদীছের মূলনীতির আলোকে পরামর্শ ও মত দিতে হবে।
* মত গ্রহণের পর সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্টের মতের ভিত্তিতে দিতে হবে, না আমীর যেটা ভাল মনে করেন সেটার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে- এ ব্যাপারে উলামায়ে কিরামের মধ্যে দু’ধরনের মত পাওয়া যায়। অনেকে বলেন সংখ্যাগরিষ্টের মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হতে হবে। আবার অনেকে বলেন আমীর যেটা ভাল মনে করেন সেটাই হবে সিদ্ধান্ত, চাই সেটা সংখ্যাগরিষ্টের মত হোক বা অল্প সংখ্যকের মত হোক বা সেটা একান্তভাবে আমীরের একারই মত হোক। তবে এই অধিকার বলে আমীর গোঁ ধরে অন্যদের উপযুক্ত
রায়কেও উপেক্ষা করে নিজের মতকে চালিয়ে দিয়ে মাশওয়ারাকে প্রহসনে পরিণত করতে পারবেন না।
* কোন পরামর্শদাতা তার পরামর্শ গ্রহণ করা হল না কেন এ জন্য অভিযোগ তুলতে পারবেন না বা তার পরামর্শ গ্রহণ হল না বিধায় গৃহীত সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে বা মন খারাপ করতে পারবেন না।
* পরামর্শের পর সিদ্ধান্ত গ্রহণপূর্বক আল্লাহ্র উপর তাওয়াক্কুল করে কাজ শুরু করতে হবে।
* মাশওয়ারার মজলিসে মজলিসের অন্যান্য যে সব সুন্নাত, আদব ও নীতিমালা রয়েছে সে দিকেও লক্ষ্য রাখবে।
সমাপ্ত: ইসলামের আলোকে রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি।
সূত্র: আহকামে যিন্দেগী।