Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

রুই জাতীয় মাছের পোনা চাষ

জাতীয় মাছের পোনা চাষ

বিষয়: রুই জাতীয় মাছের পোনা চাষ।
হ্যাশট্যাগ:#রুই জাতীয় মাছের পোনা চাষ।

কোনো নির্দিষ্ট পুকুরে রেণু পোনা ছেড়ে ধানী পোনা বা চারা পোনা উৎপাদন করার পদ্ধতিকে ‘পোনা পরিচর্যা বা পোনা চাষ’ বলা হয়। যে পুকুরে রেণু পোনা ছেড়ে ধানী পোনা পর্যন্ত বড় করা হয় তাকে ‘আঁতুড় পুকুর’ বা ‘নার্সারি’ বলা হয়। আর যে পুকুরে ধানী পোনা লালন করে চারা পোনা উৎপন্ন করা হয় তাকে ‘চারা পুকুর’ বা ‘লালন পুকুর’ বলে।

আঁতুড় পুকুরে পোনা বাঁচার হার ও বৃদ্ধি সঠিক ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে।

পুকুর নির্বাচন

আঁতুড় পুকুরের আকার ১০ – ২৫ শতক হলে ভালো হয়। পাড় উঁচু হওয়া বাঞ্ছনীয়। পাড়ে কোনো গাছপালা থাকা উচিত। প্রয়োজনমতো পুকুরের পানি শুকিয়ে ফেলা বা পানি দেওয়ার সুযোগ থাকলে ভালো ছোট আকারের যেসব জলাশয়ে পোনা উৎপাদন মৌসুমে বা সারা বছর পানির গভীরতা অল্প থাকে সে সব জলাশয় আঁতুড় পুকুর হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

পানির গভীরতা

রেণু অবস্থায় পোনা অত্যন্ত নাজুক থাকবে। তাই বেশি গভীর পুকুরে পোনা ছাড়লে পোনা মারা যায়। এ জন্য আঁতুড় পুকুরের গভীরতা ১ থেকে ১.৫ মিটার হলে ভালো হয়।

পুকুর প্রস্তুতি

পুকুর পোনার বাসযোগ্য করে তৈরি করা এবং পোনার বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা করাই পুকুর প্রস্তুতি। পূর্বে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী পুকুর প্রস্তুত করে নিতে হবে। এরপর জলজ ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ দমন করতে হবে।

জলজ কীটপতঙ্গ দমন

রেণু ছাড়ার পূর্বে পুকুর হতে অবশ্যই জলজ কীটপতঙ্গ সম্পূর্ণরূপে দূর করতে হবে ছোট ফাঁসের মশারির জাল টেনে এগুলোকে দমন করা যেতে পারে অথবা রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করে ক্ষতিকর জলজ কীট সম্পূর্ণরূপে দমন করা যায়। এ রকম দুটি রাসায়নিক দ্রব্য হলো: ক. ডিপ্টারেক্স এবং খ. কেরোসিন বা ডিজেল

See also  মাছের হ্যাচারি ব্যবস্থাপনা ও মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতি, মাছের হ্যাচারি তৈরি, মাছের হ্যাচারি ব্যবসা (বিস্তারিত)

ক. ডিপ্‌টারেক্স প্রয়োগ:

প্রতি শতকে ১ মিটার গভীর পানির জন্য ৩৫ গ্রাম হারে ডিপ্‌টারেক্স প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনীয় পরিমাণ ডিপ্‌টারেক্স পানিতে মিশিয়ে পোনা ছাড়ার ২৪ ঘণ্টা পূর্বে তা সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। এতে ক্ষতিকর জলজ কীট সম্পূর্ণ দূর হবে।

খ. কেরোসিন বা ডিজেল প্রয়োগ:

পুকুরের প্রতি শতকে ১০০ মিলিলিটার ডিজেল্ বা ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন্ ছিটিয়ে দিয়েও ক্ষতিকর জলজ কীট দমন করা যায়। বেশি বাতাস থাকলে সেদিন ডিজেল্ বা কেরোসিন পুকুরে দেওয়া যাবে না। কেরাসিন্ বা ডিজেল্ প্রয়োগের ২৪ ঘণ্টা পর পোনা ছাড়া যায়। ডিপ্‌প্টারেক্স বা কেরোসিন্ প্রয়োগের পর ছোট ফাঁসের জাল টেনে পোনা ছাড়লে ভালো হয়।

রেণু সংগ্রহ ও পরিবহন

  • আঁতুড়ে পুকুরে ৪ থেকে ৫ দিন বয়সের রেণু পোনা ছাড়া হয়। দেশে কয়েকশো সরকারি ও বেসরকারি মৎস্য হ্যাচারি রয়েছে। নিকটস্থ হ্যাচারি থেকে রেণু পোনা সংগ্রহ করা যায়।
  • পলিথিনের ব্যাগে অক্সিজেন দিয়ে রেণু পরিবহন উত্তম। রেণুসহ পলিথিন্ ব্যাগ্ ভেজা চটের বস্তায় ভরে সহজেই পরিবহন করা যায়।
  • (৮০ × ৫০) বর্গসেন্টিমিটার আকারের একটি পলিব্যাগে ৪০-৫০ হাজার রেণু পোনা পরিবহন করা যায়। এভাবে পরিবহনের ক্ষেত্রে ৮-১০ ঘণ্টা রেণু পোনা ভালো থাকে। সকালে পানির তাপমাত্রা কম থাকে। এ সময় পোনা পরিবহন ও পুকুরে ছাড়ার উপযুক্ত সময়।

রেণু পোনা ছাড়ার পদ্ধতি

রেণু পোনা যে পলিথিন ব্যাগে পরিবহন করা হয় তার অর্ধাংশ আঁতুড় পুকুরে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। এ সময়ে অল্প অল্প করে পুকুরের পানি ব্যাগের পানির সাথে মেশাতে হবে। এভাবে ব্যাগের পানির তাপমাত্রা পুকুরের পানির তাপমাত্রার সমান হলে ব্যাগের মুখ খুলে কাত করে আস্তে আস্তে পোনা ছাড়তে হবে। সাধারণভাবে প্রতি শতক পুকুরে ৬-১০ গ্রাম হারে রেণু পোনা মজুদ করা যায়।

সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ

প্রাকৃতিক খাদ্যে পোনার পরিপূর্ণ পুষ্টি সাধন হয় না। এজন্য প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি পোনা মাছকে প্রতিদিন সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। খাদ্য হিসেবে চালের মিহি কুঁড়া, গমের ভুষি, সরিষার খইল, ফিশমিল্‌ ও গবাদি পশুর রক্ত দেওয়া যেতে পারে। অনুপাত অনযায়ী উপাদানগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে খাদ্য প্রস্তুত করতে হবে। প্রস্তুত করা খাদ্য প্রতিদিন পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনীয় খাবার ২ ভাগ করে সকালে ও বিকালে দিতে

See also  মৎস্য সংরক্ষণ আইন কি, কেন ও এই আইনের উল্লেখযোগ্য বিধিসমূহ, মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে প্রচলিত আইন, পুকুর উন্নয়ন আইন এর বিধানমালা (বাংলাদেশ)#মাছ চাষের নিয়ম

পোনা বাঁচার হার ও বৃদ্ধি পরীক্ষা

রেণু পোনা মজুদের ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে চটজাল টানা উচিত নয়। ৮-১০ দিন পর একবার এবং পরবর্তীতে ১০ দিন পর পর মশারির জাল টেনে পোনা বাঁচার হার ও বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

পরিচর্যা

পানির রং বেশি সবুজ হলে বা পানির উপরিভাগ সবুজ আস্তরণ পড়লে সার ও খাদ্য দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে। বর্ণিত ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে মেনে চললে ২ মাসের মধ্যে পোনার আকার ৫ থেকে ১০ সেন্টিমিটার হয় (গড় ওজন ১০ গ্রাম) এবং বাঁচার হার শতকরা ৬০ ভাগ এর উপর রাখা যায়। এ আকারের পোনা চারা পোনা হিসেবে বিক্রির উপযোগী এবং মজুদ পুকুরে ছাড়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!