রেচন অঙ্গ কি? রেচন কি কাজ করে?
মানবদেহের রেচন অঙ্গ হলো কিডনি অথবা বৃক্ক। আর কিডনি একক হলো নেফ্রন।
রেচন মানবদেহের একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দেহে বিপাক প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থগুলো বের করে দেওয়া হয়। দেহের এই বর্জ্য পদার্থগুলো শরীরে কোনো কারণে জমতে থাকলে নানা রকমের অসুখ দেখা দেয়, পরবর্তীতে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। যে তন্ত্রের মাধ্যমে দেহের বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশিত হয়, তাকে রেচনতন্ত্র বলে।
শরীরের অতিরিক্ত পানি, লবণ এবং জৈব পদার্থগুলো ভেনাক্যাভা ইনফেরিওর সাধারণত রেচনের মাধ্যমে দেহ থেকে বের করে দিয়ে বৃক্ক/কিডনি দেহের শারীরবৃত্তীয় ভারসাম্য রক্ষা করে।
মানব রেচনতন্ত্রের একটি চিত্র দেওয়া আছে।
রেচন পদার্থ কি? রেচন পদার্থ গুলো কি কি?
রেচন পদার্থ বলতে মূলত নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থকে বোঝায়। মানবদেহের রেচন পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে আসে।
মূত্রের প্রায় 90 ভাগ উপাদান হচ্ছে পানি। অন্যান্য উপাদানের মধ্যে আছে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন ও বিভিন্ন ধরনের লবণ।
ইউরোক্লোম নামে এক ধরনের রঞ্জক পদার্থের উপস্থিতিতে মূত্রের রং হালকা হলুদ হয়। আমিষ জাতীয় খাদ্য খেলে মুত্রের অম্লতা বৃদ্ধি পায় আবার ফলমূল এবং তরিতরকারি খেলে সাধারণত ক্ষারীয় মূত্র তৈরি হয়।
রেচন প্রক্রিয়া কাকে বলে?
জীবদেহে কোষের ভিতরে অসংখ্য রাসায়নিক ক্রিয়া ঘটে। এতে জীবদেহের শারীরবৃত্তীয় কাজগুলো সুচারুরূপে সম্পাদিত হয়, জীব বেঁচে থাকে। রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন কিছু পদার্থ দেহের জন্য অপরিহার্য আবার কিছু পদার্থ দেহের জন্য ক্ষতিকর। এই ক্ষতিকর পদার্থগুলো দেহ থেকে বের করে দেওয়া খুবই জরুরি। যেমন শ্বসনের সময় গ্লুকোজ ভেঙে কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়, রক্ত এই কার্বন ডাই-অক্সাইড পরিবহন করে ফুসফুসে নিয়ে যায় এবং ফুসফুস থেকে দেহের বাইরে নির্গত হয়। একইভাবে বৃত্ত বা কিডনি নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য ও অতিরিক্ত অম্ল শরীর থেকে বের করে দেয়।