শবে বরাতের রোজা কয়টি?
সহীহ হাদীস [সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং 2593] অনুযায়ী, শবে বরাতের কোনো তিনটি বা দুটি নির্দিষ্ট রোজা নেই। আল্লাহর নবি সামান্য কয়েক দিন ব্যতীত পুরা শাবান মাস অর্থ্যাৎ শবে বরাতের মাস রোজা পালন করতেন। কারণ এ মাসে (শবে বরাতের মাস/রজব মাসে) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বান্দার আমলগুলো পেশ করা হয়।
প্রচলিত শবে বরাত এর নির্দিষ্ট ১টি, ২টি বা ৩টি রোজা সম্পর্কে যেই কয়েকটি হাদীসগুলো পাওয়া যায় সেগুলো মুহিাদ্দীসগণ কর্তৃক দূর্বল/যয়ীফ/বানোয়াট/মিথ্যা বলে প্রমাণিত।
শবে বরাতের মধ্যরজনীতে কি ভাগ্য নির্ধারণ হয়?
শবে বরাতের মধ্যরজনীতে ভাগ্য নির্ধারণ হয় বলে ব্যাপক প্রচলিত আছে, প্রবিত্র কুরআন অনুযায়ী সেটাও ভুল। কুরআন বলে, লাইলাতুল কদরেরর রাতে ভাগ্য নির্ধারণ হয় এবং রাসূল (সা.) এর বাণী অনুযায়ী, শবে বরাতের মাস/রজব মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বান্দার আমলগুলো পেশ করা হয়।
শবে বরাতের রোজা কয়টি পালন করা প্রচলিত আছে?
প্রচলিত শবে বরাতের রোজা পালন করা হয় শাবান মাসের মধ্যবর্তী সময়ে ৩ দিন অথবা ২ দিন।
শবে বরাতের রোজার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ এর বক্তব্য:
শবে বরাদের রোজা কয়টি এ সম্পর্কে কয়েকজন স্কলার এর বক্তব্য শুনুন:
শবে বরাতের রোজা কয়টি তার সহীহ হাদীস:
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং 2593] তে বলা হয়েছে, রাসূল শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে এত অধিক নফল রোজা পালন করেননি। তিনি পুরো শাবান মাসই রোজা রাখতেন; তিনি সামান্য কয়েক দিন ব্যতীত পূর্ণ শাবান মাস সাওম পালন করতেন। এ মাসে (শবে বরাতের মাস/রজব মাসে) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বান্দার আমলগুলো পেশ করা হয়। এ জন্য আমি চাই যে আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে এমতাবস্থায় পেশ করা হোক যে আমি রোজাদার।
শবে বরাতের রোজাসহ ১০ ধরণের সুন্নাত/মুস্তাহাব/নফল রোজার নাম:
নিম্নোক্ত সকল রোজা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত প্রমাণ/রেফারেন্সসহ দেওয়া আছে।
১| শবে বরাতের রোজা
রাসূল শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে এত অধিক নফল রোজা পালন করেননি। তিনি পুরো শাবান মাসই রোজা রাখতেন; তিনি সামান্য কয়েক দিন ব্যতীত পূর্ণ শাবান মাস সাওম পালন করতেন।
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং 2593]
ফযিলত→এ মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বান্দার আমলগুলো পেশ করা হয়। এ জন্য আমি চাই যে আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে এমতাবস্থায় পেশ করা হোক যে আমি রোজাদার।
২| শাওয়াল মাসের ৬ টি রোজা।
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং 2629]
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং 2593]
ফযিলত: এই ছয়টি রোজা রাখার সাওয়াব, পূর্ণ একবছর নফল রোজা রাখার সমান সাওয়াব পাওয়া যায়।
৩| যিলহজ্জ মাসের প্রথম আটদিন রোযা।
[তিরমিযী শরিফ (ইফা):: হাদিস নং ৭৫৫]
যিলহজ্জ মাসের প্রথম আটদিন রোযা রাখা হজ্জপালনকারী ও হজ্জপালনকারী নয় সকলের জন্য মুস্তাহাব।
ফজিলত: অন্য যে কোন সময়ের নেক আমলের চেয়ে এ দশদিনের নেক আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়।
৪| যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ আরাফার দিন।
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং ২৬১৫]
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং ২৬১৫]
ফযিলত: এই রোজার দ্বারা পিছনের এক বৎসর এবং সামনের এক বৎসর এর গোনাহ মাফ হয়ে যায়।
৫| মহাররম মাসের ৯,১০ বা ১০,১১ তারিখ আশুরা রোজা।
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং ২৬১৫]
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং ২৬১৫]
ফযিলত: পূর্ববর্তী বছরের গুনাহসমূহের কাফফারা হয়ে যায়।
৬| চন্দ্র মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনের তারিখে রোযা রাখা।
[তিরমিযী শরিফ (ইফা):: হাদিস নং ৭৫৯]
[আবু দাউদ শরিফ (ইফা):: হাদিস নং ২৪৪১]
ফযিলত: এ রোযাগুলোর মর্যাদা বা সাওয়াব সারা বছর রোযা রাখার সমতুল্য।
৭। প্রতি মাসে যে কোন তিন দিন করে সাওম পালন করা।
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং ২৬১৫]
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং ২৬১৫]
[তিরমিযী শরিফ (ইফা):: হাদিস নং ৭৬০]
ফযিলত: কেউ যদি প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম পালন করে তবে তা যেন সারা বছরই সিয়াম পালন করা হলো।
৮| প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা।
[তিরমিযী শরিফ (ইফা):: হাদিস নং ৭৪৩]
[তিরমিযী শরিফ (ইফা):: হাদিস নং ৭৭৫]
ফযিলত: প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর দরবারে বান্দার আমল পেশ করা হয়। রাসূল চাইতেন রোজা অবস্থায় তাহার আমলসমূহ আল্লাহর কাছে পেশ করা হোক।
৯। প্রত্যক মাসেই কিছু রোজা রাখা উত্তম, কোন মাস সাওম পালন থেকে থালি না থাকা মুস্তাহাব।
[ সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং ২৬১৫]
[সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং ২৬১৫]
ফযিলত: এমন কোন মাসও অতিবাহিত হয়নি যাতে রাসূল অন্তন কিছু রোযা রাখেন নি।
১০| সওমে দাউদ বা দাউদ (আ) এর মত এক দিন পর পর রোজা রাখা।
[ইবনে মাজাহ (তাও: পাব):: হাদিস নং ১৭১২]
ফজিলত: রোযাসমূহের মধ্যে দাউদ (আঃ)-এর রোযা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়।
নোট: যেই ৫ দিন রোজা রোজা রাখা হারাম সেই ৫ দিন ব্যাতীত যে কোন দিন নফল রোজা রাখা যায়।
শবে বরাতের রোজা কয়টি, তার ইমেজ/ছবি আকারে উত্তর:
