Skip to content

 

শাবান মাসের রোজা কয়টি? শাবান মাসে ফজিলত ও শাবান মাসের দোয়া

শাবান মাসের রোজা কয়টি_ শাবান মাসে ফজিরত ও শাবান মাসের দোয়া

আমরা এই পোষ্টটি থেকে শাবান মাসের রোজা কয়টি? পাশাপাশি শাবান মাসে ফজিরত ও শাবান মাসের দোয়া সম্পর্কে জানব।

শাবান মাসের রোজা কয়টি?

শাবান মাসের রোজার সংখ্যা কোন নির্দিষ্ট নেই। আমাদের রাসূল শাবান মাসের সবচেয়ে বেশি রোজা রেখেছেন রমজান ছাড়া এতবেশি নফল রোজা শাবান মাস ছাড়া অন্য কোনো মাসে রাখেননি।

হাদিসে এসেছে-হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, ‘আমি রাসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কখনো রমজান ছাড়া পুরো মাস রোজা রাখতে দেখিনি; আর শাবান মাসের মতো অন্য কোনো মাসে অধিক (নফল) রোজা রাখতেও দেখিনি।’ (বুখারি ও মুসলিম)

শাবান মাসে ফজিলত/রোজা রাখার কারণ কি?

আমরা জেনেফি আমাদের রাসূল শাবান মাসে অর্ধেকেরও বেশি দিন নফল রোজা রাখতেনকারণ এ মাসে (শবে বরাতের মাস/রজব মাসে) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বান্দার আমলগুলো পেশ করা হয়।

সহীহ হাদীস [সহীহ মুসলিম (ইফা):: হাদিস নং 2593] অনুযায়ী, শাবান মাসের কোনো তিনটি বা দুটি নির্দিষ্ট রোজা নেই। আল্লাহর নবি সামান্য কয়েক দিন ব্যতীত পুরা শাবান মাস অর্থ্যাৎ শবে বরাতের মাস রোজা পালন করতেন। কারণ এ মাসে (শবে বরাতের মাস/রজব মাসে) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বান্দার আমলগুলো পেশ করা হয়।

শাবান আরবি মাসের কত তম মাস?

শাবান হচ্ছে অষ্টম মাস, যা রমজানুল মোবারক ও রজব মাসের মাঝে এসে থাকে।  শাবান আরবি শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে বেরিয়ে যাওয়া, ছড়িয়ে পড়া ইত্যাদি।

এ মাসকে শাবান শব্দ দ্বারা নামকরণ প্রসঙ্গে হাফেজ ইবনে হাজার (রাহ.) বলেন, ‘আরবের লোকেরা এ মাসে পানি সংগ্রহের জন্য বসতি ছেড়ে বেরিয়ে যেতো, তাই এ মাসকে শাবান শব্দ দ্বারা নামকরণ করা হয়েছে, যার মাঝে বেরিয়ে যাওয়ার অর্থ রয়েছে। অথবা এ শব্দ দ্বারা নামকরণের এই কারণ হতে পারে যে, রজব মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ হওয়ার দরুন সবাই নিজের এলাকায় অবস্থান করতো।

এখন আমরা এখন শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানব।

শাবান মাসের ফজিলতঃ

আগেই বলা হয়েছে শাবান মাসের পএধান ফজিলত হলো- এ মাসে (শবে বরাতের মাস/রজব মাসে) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বান্দার আমলগুলো পেশ করা হয়।

See also  ৭টি রমজানের প্রশ্ন উত্তর

এছাড়াও বিভিন্ন হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় হজরত মুহাম্মদ (সা.) পবিত্র রজব ও শাবানে রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। রমজানে অধিক ইবাদতের জন্য সময়-সুযোগ বের করতেন। মানসিকভাবে তৈরি হতেন। আর এ কারণেই তিনি পবিত্র শাবানের দিন, তারিখ গুরুত্বসহকারে হিসাব রাখতেন। তাহলে বুজতেই পারছেন যে শাবান মাসের ফজিলত অপরিসীম।

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসূল (সা.) পবিত্র শাবানের (দিন, তারিখ হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ্য রাখতেন যা অন্য কোনো মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না (সুনানে আবু দাউদ ১/৩১৮)। অনেক হাদিসেই বর্ণিত হয়েছে-হজরত মুহাম্মদ (সা.) পবিত্র শাবানের চাঁদের দিন, তারিখের হিসাব রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। সুতরাং পবিত্র শাবান মাসের দিন-তারিখের হিসাব রাখাটাই সুন্নত এবং মুমিনদের করণীয়।

পবিত্র শাবান মাসে অধিকহারে নফল রোজা রাখা উত্তম। এ প্রসঙ্গে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। হজরত উন্মে সালামা (রা,) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হজরত নবী করিম (সা.) শাবান ও রমজান ব্যতীত দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি নবী করিম (সা.)কে শাবান মাসের মত এত অধিক (নফল) রোজা রাখতে আর দেখিনি। এ মাসের অল্প কিছুদিন ব্যতীত বরং বলতে গেলে সারা মাসটাই তিনি নফল রোজা রাখতেন (জামি তিরমিযী ১/১৫৫)।

শাবান মাসের দোয়া আমাদের সকলের জানা উচিত। শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানা থাকলে আমাদের সকলের এবাদত বন্দেগী করার মানসিকতা বৃদ্ধি পাবে।

শাবান মাসের দোয়াঃ

শাবান মাসের দোয়া

তাছাড়া প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব মাস থেকেই আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা শুরু করতেন। শাবান মাস বেশি বেশি রোজা রাখার পাশাপাশি আল্লাহ তাআলা কাছে রমজান পেতে সবচেয়ে বেশি দোয়া করে বলতেন- اَللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন। অর্থাৎ রমজান পর্যন্ত হায়াত দান করুন।

সুতরাং, মুমিন মুসলমানের উচিত, শাবান মাসজুড়ে সপ্তাহিক ও মাসিক সুন্নাতি আমল রোজা পালনের মাধ্যমে একসঙ্গে একাধিক সুন্নাতের ওপর আমল করা। রমজান পেতে বেশি বেশি দোয়া করা।

See also  ঈদুল ফিতর ২০২৩ কত তারিখে বাংলাদেশ? (২০২৩) সালের রোজার ঈদ কবে?

শাবান মাসে যেসব দিন রোজা রাখলে একইসাথে আদায় হবে একাধিক সুন্নাত/নফল রোজাঃ

যদি কেউ সুন্নাতি আমল হিসেবেও এ মাসে রোজা রাখতে চায় তবে তা হতে পারে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাতের বাস্তবায়নের উপায়। সে হিসেবে ১০-১১ দিন রোজা রাখার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। তাহলো-

  1. সাপ্তাহিক রোজা বা বৃহস্পতিবার ও সোমবার এর রোজা।
  2. মাসিক রোজা/আইয়ামে বীজ এর ৩ দিন ১২, ১৩ ও ১৪ শাবান তথা ২৭, ২৮, ২৯ মার্চ (শনি-সোমবার)।

শাবান মাস ছাড়াও এ দিনগুলোতে রোজা রাখা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। তাই শাবান মাসে যদি কেউ শুধু এ রোজাগুলোই রাখে তাতেও দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাতি আমল আদায় হবে। তাহলো-

  1. নিয়মিত সাপ্তাহিক ও মাসিক রোজা রাখা আমল বাস্তবায়ন হবে।
  2. শাবান মাসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশি বেশি নফল রোজা রাখতেন, তা-ও আদায় হবে।

বিজ্ঞাপন

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

শাবান মাসের রোজাঃ

রাসুল(সাঃ) এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখতেন। শাবান মাসের রোজা মুসলিম ধর্ম প্রাণ সকল মানুষের জন্য সুন্নত। শাবান মাসের ফজিলত যেমন অপরিসীম ঠিক তেমন শাবান মাসের দোয়া,আমল মুমিন মুসলমানের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ হাদিস থেকে প্রতিয়মান হয় যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ ও সুন্নাহ হলো এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা।

শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসঃ

 শাবান মাসের ফজিলত এবং শাবান মাসের গুরুত্ব নিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর হাদিস রয়েছে। আসুন আমরা শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আরো জানিঃ

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আদম সন্তানের প্রতিটি আমলের সওয়াব দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়। পুণ্যকর্মের সওয়াব দশগুণ থেকে সাতশ’ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, তবে রোজা ব্যতীত। কারণ রোজা আমার আর আমিই এর প্রতিদান দিই। [সহিহ বোখারি ও মুসলিম]

নফল ইবাদতের মধ্যে রোজা অন্যতম। আল্লাহতায়ালার নৈকট্য অর্জনের জন্য, ফরজ-ওয়াজিব নয়- এমন রোজা পালনকেই নফল রোজা বলা হয়। নফল রোজার অনেক বড় ফজিলত ও সওয়াব রয়েছে।

আলহামদুলিল্লাহ! কি অভাবনীয় সুযোগ। মহিমান্বিত শাবান মাস চলছে। মাহে রমজানের আগমনি বার্তা নিয়ে আসে শাবান মাস। তাহলে আমরা বুজতেই পারছি শাবান মাসের ফজিলত অনেক যার গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা চেষ্টা করব শাবান মাসের রোজা রাখার।

See also  রোজা ভঙ্গের কারণ/রোযা ভঙ্গের কারণ (6টি তালিকা) তে মোট (71টি কারণ)

শাবান মাসের ইতিহাসঃ

ইসলামি ইতিহাসেও শাবান মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। মুসলমানদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ঘটনা এ মাসে ঘটেছিল। 

ক. কেবলা পরিবর্তন। মদীনায় হিজরতের পর মুসলমানরা কিছু দিনের জন্য বাইতুল মাকদিসের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করে। আল্লাহ তায়ালা পুনরায় কাবা শরীফকে মুসলমানদের জন্য কেবলা নির্ধারণ করেন এ মাসে। 

খ. ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান জিহাদের হুকুম এ মাসে নাজিল হয়। দীর্ঘ সময় মুসলমানরা নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর জিহাদের মাধ্যমে মুসলমানদের প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠার নির্দেশ আসে এ মাসে।

শাবান মাসের ফজিলত কেন ঐতিহাসিক তা আমরা জানলাম। 

শাবান মাসের ফজিলত ও রোজা সম্পর্কে আরও জেনে রাখুনঃ

কোনো ব্যক্তি যদি অসুবিধা কিংবা প্রয়োজনবশত শাবান মাসের রোজা রাখতে না পারে, তাহলে সে রমজান মাসের পর রোজা রাখবে। তবে শাবান মাসের রোজা পরবর্তী সময়ে পালন করা ফরজ কিংবা ওয়াজিব নয়। সাহাবি ইমরান ইবনে হোসাইন থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এ মাসের মধ্যভাগে কিছুদিন রোজা রেখেছিলে? সে বলল, না। রাসুল (সা.) বললেন, তুমি তার পরে রমজানের রোজা শেষ করে দুদিন রোজা রাখবে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৬৪২]

আমরা এ নিবন্ধন থেকে শাবান মাসের ফজিলত, শাবান মাসের দোয়া শাবান মাসের রোজা সম্পর্কে জানলাম। আমরা চেষ্টা করব শাবান মাসের প্রত্যেকটি আমল ভালোভাবে পালন করার। আপনারা কিভাবে শাবান মাস অতিবাহিত করবেন আমাদের সেটা কমেন্ট বক্সে জানান। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোষ্টে। আসালামুআলাইকুম ওয়ারসমাতুল্লাহ।

শাবান মাসের ফজিলত অনেক বলে আমরা সব সময় দোয়া দরুদ ইবাদত-বন্দেগির মধ্যে থাকার চেষ্টা করব। শাবান মাসের দোয়া বেশি বেশি পাঠ করবো। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!