শিং-মাগুর খুব সুস্বাদু মাছ। এর পুষ্টিমান বেশি এবং রোগীর পথ্য হিসেবে বহুল ব্যবহার ও স্বাদের কারণে বাজারে এসব মাছের প্রচুর চাহিদা আছে।
এরা সর্বভুক শ্রেণির মাছ। পোকা- মাকড়ের শুককীট, মুককীট, প্রাণিকণা এবং পচা জৈব পদার্থ শিং-মাগুরের খাদ্য।
শিং-মাগুর মাছ বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার সর্বত্র এবং আফ্রিকাতে পাওয়া যায়।
আমাদের বেশি মাগুর প্রায় ৩০-৪৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। ছোট বড় সব ধরনের পুকুরেই শিং-মাগুর চাষ করা যায়। তবে অগভীর ছোট পুকুরই এদের চাষের জন্য ভালো। পানির গভীরতা ২-৩ মিটার হলে ভালো হয়।
পুকুরের আয়তন ২০০ বর্গমিটার থেকে ৪,০০০ বর্গমিটার পর্যন্ত হতে পারে। পুকুরের পাড় অবশ্যই খাড়া হতে হবে। পুকুর পাড়ে ৩০ সেন্টিমিটার ইটের খাড়া দেওয়াল বা বাঁশের বেড়া দিলে ভালো হয়।
কার্পের পুকুর প্রস্তুতির পদ্ধতি অনুসারে শিং-মাগুরের জন্য পুকুর প্রস্তুত করে দিতে হবে।
প্রাকৃতিক উৎস থেকে শিং-মাগুরের পোনা সংগ্রহ করা যেতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি কিছু খামারেও বিদেশি মাগুরের পোনা পাওয়া যায়।
শিং-মাগুর চাষের ক্ষেত্রে প্রতি ৪০ বর্গমিটারে ২০০-৩০০ পোনা ছাড়া যায়। এদের পুকুরে সার কম ব্যবহার করা হয়। ৭ দিন পর পর প্রতি ৪০ বর্গমিটারে ১ কেজি হারে গোবর দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে চালের কুঁড়া, সরিষার খইল ও ফিশমিল্ খাদ্য হিসেবে দেওয়া যায়।
মাছের মোট ওজনের ৩-৫% হারে প্রতিদিন খাবার দিতে হয়। তবে চাষের তৃতীয় মাস থেকে গরু-ছাগলের নাড়িভুঁড়ি কেটে দেওয়া যায়।
নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ ও পরিচর্যা করলে ৬ মাসে একটি মাগুর ১৩০ থেকে ১৫০ গ্রাম এবং একটি শিং ১০০-১২৫ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।
৬ মাসেই শিং-মাগুরের একটি ফসল পাওয়া যায়। প্রতি ফসলে হেক্টর প্রতি ৩-৪ টন উৎপাদন পাওয়া যায়।