Skip to content

 

22টি শিক্ষকের প্রতি ছাত্রে দায়িত্ব কর্তব্য তথা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের আদব বা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের সম্মান

22টি শিক্ষকের প্রতি ছাত্রে দায়িত্ব কর্তব্য তথা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের আদব বা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের সম্মান

বিষয়: 22টি শিক্ষকের প্রতি ছাত্রে দায়ত্ব কর্তব্য তথা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের আদব বা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের সম্মান।
হ্যাশট্যাগ: #শিক্ষকের প্রতি ছাত্রে দায়ত্ব কর্তব্য #শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের আদব #শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের সম্মান।

22টি শিক্ষকের প্রতি ছাত্রে দায়ত্ব কর্তব্য তথা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের আদব বা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের সম্মান

১. উস্তাদের আদব রক্ষা করা: কথা-বার্তা, শব্দ প্রয়োগ, আচার-আচরণ, উঠা-বসা, চলা-ফেরা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই আদব রক্ষা করতে হবে। যেমন উস্তাদের আগে বেড়ে কথা না বলা, উস্তাদের সামনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জোরে কথা না বলা, তাঁদের দিকে পিছন দিয়ে না বসা, এক সাথে চলার সময় তাঁদের সামনে না চলা, তাঁদের সামনে বেশী না হাসা, বৃথা কথা না বলা ইত্যাদি।

২. উস্তাদের প্রতি ভক্তি রাখা: উস্তাদের সাথে ভক্তি সহকারে কথা বলা, ভক্তি সহকারে তাঁদের দিকে দৃষ্টি দেয়া এবং হাবভাবে ভক্তি প্রকাশ করা কর্তব্য।

৩. উস্তাদকে আজমত ও শ্রদ্ধা করা: পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করে শ্রদ্ধা ও আজমতের সাথে তাঁদের সামনে হাজির হওয়া কর্তব্য।

৪. উস্তাদের সামনে তাওয়াজু’ ও বিনয়ের সাথে থাকা: কথা-বার্তা ও আচার- আচরণ সব কিছুতেই বিনয় থাকতে হবে। দুনিয়ার সব ক্ষেত্রেই খোশামোদ তোষামোদ নিন্দনীয়; একমাত্র উস্তাদের সাথে তা প্রশংসনীয়।

৫. উস্তাদের খেদমত করা: এই খেদমতের মধ্যে উস্তাদ অভাবী এবং ছাত্র স্বচ্ছল হলে উস্তাদের বৈষয়িক সহযোগিতা করা এবং তাঁদেরকে হাদিয়া-তোহফা প্রদান করাও অন্তর্ভুক্ত।

৬. উস্তাদের হক অনেকটা পিতার মত। বস্তুতঃ উস্তাদ হল রূহানী পিতা, তাই পিতার ন্যায় উস্তাদের হকও তাঁর মৃত্যুর পরেও বহাল থাকে। এ জন্যেই উস্তাদের মৃত্যুর পরও সর্বদা তাঁর জন্যে দু’আ করা কর্তব্য। উস্তাদের নিকটারীয়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা, তাঁদের খেদমত করা, এমনি ভাবে উস্তাদের বন্ধু-বান্ধব ও সমসাময়িক অন্যান্য শিক্ষকদের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং প্রয়োজনে তাঁদের খেদমত করা কর্তব্য।

৭. উস্তাদের খেদমতে লিপ্ত হলে আদব হল তাঁর অনুমতি ব্যতীত চলে না যাওয়া। (অনুমতি প্রকাশ্য হোক বা লক্ষণ থেকে বোঝা যাক।)

৮. কোন কারণে উস্তাদ অসন্তুষ্ট হলে বা উস্তাদের মেজাযের পরিপন্থী কোন কথা বলে ফেললে সাথে সাথে নিজের ত্রুটির জন্য ওজরখাহী করা এবং উস্তাদকে সন্তুষ্ট করা জরুরী।

৯. ছাত্রের কোন অসংগত প্রশ্ন বা অসংগত আচরণের কারণে উস্তাদ রাগ করলে, বকুনি দিলে বা মারধর করলে ছাত্রের কর্তব্য সেটা সহ্য করা। এমনকি অন্যায়ভাবে কিছু বললেও তার নিন্দা-শেকায়েত না করা এবং মন খারাপ না করা উচিত।

১০. ছাত্রের কর্তব্য মনোযোগের সাথে উস্তাদের বক্তব্য ও ভাষণ শ্রবণ করা, অন্যমনস্ক না হওয়া এবং উস্তাদের কথা ভাল করে ইয়াদ/মুখস্থ করা।

১১.উস্তাদ কোন বিষয়ে প্রশ্ন করতে নিষেধ করলে তা মান্য করা উচিত এবং কখনো তাকে অসুবিধায় ফেলতে চেষ্টা না করা উচিত। কোন বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্ন করাও নিষেধ। নিজেদের মেধার গৌরব প্রদর্শনের জন্য প্রশ্ন করা বা অস্পষ্ট কিংবা অর্থহীন প্রশ্ন করাও উচিত নয়।

১২. উস্তাদের কোন বক্তব্য বোধগম্য না হলে সে জন্য উস্তাদের প্রতি কুধারণা পোষণ করবে না বরং বুঝতে না পারাকে নিজের বোধশক্তির ত্রুটি মনে করবে।।

১৩. উস্তাদের মতের বিপরীত অন্য কারও মত তাঁর সামনে বয়ান করবে না।

১৪. পাঠ দানের সময় সম্পূর্ণ নিরব থাকা উচিত। এদিক সেদিক তাকানো, কথা-বার্তা বলা বা হাসি তামাশায় লিপ্ত হওয়া সম্পূর্ণ বর্জনীয়

১৫.নিজের কোন ত্রুটি হলে উস্তাদের সামনে অকপটে তা স্বীকার করে নেয়া কর্তব্য। অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত না হওয়া উচিত।

১৬.উস্তাদের কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে সে জন্য উস্তাদের প্রতি ভক্তি হারিয়ে না বসা বরং তার এমন কোন সুব্যাখ্যা বের করা, যাতে উস্তাদ রক্ষা পান। অবশ্য স্পষ্টতঃই উস্তাদ থেকে কোন অন্যায় সংঘটিত হলে তার সমর্থন না করা চাই।

১৭. মাঝে মধ্যে চিঠিপত্র যোগাযোগ ও হাদিয়া-তোহফা দ্বারা তাঁদের মন খুশি করতে থাকা কর্তব্য। সারা জীবন এটা করতে থাকবে। ছাত্রজীবন শেষ হয়ে গেলেই উস্তাদের হক বন্ধ হয়ে যায় না।

১৮.নিজের দ্বারা উস্তাদের আসবাব পত্রের ক্ষতি সাধন হলে আদবের সাথে সেটা জানিয়ে দেয়া জরুরী। গোপন রেখে উস্তাদকে কষ্ট দেয়া অনুচিত।

১৯.উস্তাদ রোগাক্রান্ত হলে অথবা দুর্বল হয়ে পড়লে কিংবা অসুবিধাজনক অবস্থায় থাকলে সবক পাঠ বন্ধ রাখা।

২০.শাগরিদকে উস্তাদের খেদমতে হাজির হয়ে ইলম শিক্ষা করতে হবে। শাগরিদের নিকট পড়াবার জন্য আসার কষ্ট উস্তাদকে না দেয়াই আদব।

২১.উস্তাদ যা পড়াবেন পূর্বাহ্নে তা মুতালা করা (পড়ে আসা)-ও উস্তাদের হকের অন্তর্ভুক্ত। এতে করে তাকে বোঝানোর জন্য উস্তাদকে অতিরিক্ত বেগ পেতে হবে না বা বাড়তি কোন প্রশ্নের জবাব দেয়ার পেরেশানী উস্তাদকে সইতে হবে না।

২২.উস্তাদ কোন ছাত্রের জন্য কোন বিশেষ বিষয় বা বিশেষ কিতাব/বই পড়া ক্ষতিকর মনে করে নিষেধ করলে ছাত্রের পক্ষে তা থেকে বিরত থাকা উচিত।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : যাদের থেকে দ্বীনী মাসআলা-মাসায়েল শিক্ষা করা হয় তারাও শিক্ষক বলে গণ্য। এমনকি যাদের প্রণীত দ্বীনী কিতাব পত্র দ্বারা কেউ উপকৃত হয়, এ নিয়ম অনুযায়ী তাঁরাও তার উস্তাদ এবং সে তাঁদের ছাত্র বা শাগরিদ বলে গণ্য। উস্তাদের ন্যায় তাঁদেরও হক রয়েছে, তবে কিছুটা হকের মধ্যে কমী বেশিতো থাকবেই, যা সহজে বোধগম্য।

সমাপ্ত: 22টি শিক্ষকের প্রতি ছাত্রে দায়ত্ব কর্তব্য তথা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের আদব বা শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের সম্মান।
সূত্র: আহকামে যিন্দেগি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!