Skip to content

 

সজীব প্রাণবন্ত কথা বলুনঃ কথা বলার দক্ষতা অর্জন করুনঃ বক্তব্যে শ্রোতাদের মন জয় করা সহজ উপায়, একজন সফল বক্তা হওয়ার উপায়, বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম ও ভাষণ দেওয়ার নিয়ম, কথা বলার কৌশল, কথা বলার জড়তা দূর করার উপায় (পর্ব-৪, লেখকঃ ডেল কার্নেগী, বই অনুবাদ)।

সজীব প্রাণবন্ত কথা বলুনঃ কথা বলার দক্ষতা অর্জন করুনঃ বক্তব্যে শ্রোতাদের মন জয় করা সহজ উপায়, একজন সফল বক্তা হওয়ার উপায়, বক্তব্য ওয়ার নিয়ম ও ভাষণ দেওয়ার নিয়ম, কথা বলার কৌশল, কথা বলার জড়তা দূর করার উপায় (পর্ব-৪, লেখকঃ ডেল কার্নেগী, বই অনুবাদ)।

বিষয়ঃ খামারিয়ান এর আজকের এই পোষ্টটিতে তুলে ধরা হবে, সজীব প্রাণবন্ত কথা বলুনঃ কথা বলার দক্ষতা অর্জন করুনঃ বক্তব্যে শ্রোতাদের মন জয় করা সহজ উপায়, একজন সফল বক্তা হওয়ার উপায়, বক্তব্য ওয়ার নিয়ম ও ভাষণ দেওয়ার নিয়ম, কথা বলার কৌশল, কথা বলার জড়তা দূর করার উপায় (পর্ব-৪, লেখকঃ ডেল কার্নেগী, বই অনুবাদ)। আশা করি শেষ অবধি সাথেই থাকবেন, চলুন শুরু করা যাক।

◼ প্রথম মহাযুদ্ধের অব্যবহিত পরের কথা। আমি তখন লন্ডনে টমাস শ্যাননের সঙ্গে কাজ করছি। তিনি তখন এলেনবী এবং লরেন্স অফ অ্যারাবিয়ার জীবন ও কাজকর্মের উপর এক যুগান্তকারী তাৎপর্যপূর্ণ বিশ্লেষণধর্মী বক্তৃতা দিচ্ছেলেন। একদিন বিকেলে হাতে কোন কাজ না থাকায় হাইড পার্কের শ্বেতপাথর নির্মিত প্রধান প্রবেশ পথের কাছে এসে দাঁড়িয়েছিলাম। এখানে আইনের তোয়াক্কা না রেখে যে কেউ আইন-শৃঙ্খলা, ধর্ম, মানবতা, রাজনৈতিক বা কোন বিষয়ের ওপর খোলাখুলি বক্তব্য রাখতে পারে। বিভিন্ন বক্তা যথারীতি বক্তৃতা করে চলেছিলো !…

◼ আমি প্রথম বক্তার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। একজন ক্যথলিক-তাঁর ধর্মের অনুশাসন আর পোপ সম্পর্কে বলছিলেন….

◼ আমি দ্বিতীয় বক্তার কাছে গেলাম। একজন স্যোসালিষ্ট কার্লমার্কসীয় দর্শন বিষয়ে জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য রাখছিলেন…..

◼ আমি তৃতীয় বক্তার কাছে এগিয়ে গেলাম। বক্তার আলোচ্য বিষয় ছিলো বহুগামীতা। একজন মানুষের এমন অধিকর থাকা উচিত যাতে সে কমপক্ষে চারজন স্ত্রী রাখতে পারে……

◼ আপনারা কি বিশ্বাস করেন। চারটি বিয়ে করার পক্ষে যিনি বক্তব্য রাখছিলেন তাঁর ওখানে সবচেয়ে কম শ্রোতা ছিলো? ভিড় ছিলো না একদম। অথচ অন্য দু’জন বক্তার চারপাশে পিঁপড়ের মত পিলপিল করে লোকের ভিড় বাড়ছিলো। কেন এমন হল? কারণ কি? নিজের কাছেই প্রশ্ন করলাম আমি। খুব ভালো করেই তিনজন বক্তা এবং তাদের বক্তব্য বিষয় শুনছিলাম। তাতে বেশ পরিষ্কার বুঝতে পারলাম, কেন তৃতীয় বক্তার সময় একদম লোক হচ্ছিল না।
মূল কারণ হল-
যে বক্তা বহুগামীতা এবং চারজন স্ত্রী রাখতে বিশ্বাসী বলে বক্তব্য রাখছিলেন, তাঁর নিজেরই সে বিষয়ে মোটেই আস্থা ছিলো না। বিশ্বাস ছিলো না। দায়সারা ভাসা-ভাসা অস্পষ্ট ছিলো তাঁর বক্তৃতা। শুনতে নিষ্প্রাণ লাগছিলো।

◼ কিন্তু অপর দুজন বক্তা তাঁদের বক্তব্য বিষয়কে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেছিলেন। তাঁরা ছিলেন সে বিষয়ে সৎ আর প্রাণবন্ত। নাটকীয়ভাবে হাত-মুখ এবং চোখের ব্যঞ্জনায় তাঁরা তাঁদের বক্তব্যকে অতিমাত্রায় বিশ্বাসযোগ্য আর সজীব করে তুলেছিলেন। তাঁরা শ্রোতাকে প্রভাবিত করে বক্তব্যকে শ্রোতার মনে গেঁথে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন। সজীবতা, প্রাণবন্ততা, উদ্দীপনা এই তিন গুণের সমন্বয় সাধন করার দিকে প্রতিটি বক্তারই মনোযোগী হওয়া আবশ্যক।

জনসাধারণ একজন সজীব, প্রাণবন্ত আর উদ্দীপ্তময় বক্তাকেই কেবলমাত্র পছন্দ করেন। ঠিক যেমন বন্য তুর্কীরা খুশি হয় পাকা গমের ক্ষেত দেখতে পেলে।

(ক) এখন বিষয় নির্বাচন করুন যা আপনি ভালো জানেন

◼ যে বিষয়ে আপনার নিজেরই বিদ্যেবুদ্ধি সাধারণ মাপের, সেখানে আপনি কি করে অসাধারণ বক্তব্য পেশ করবেন বলে আশা করেন? তাই এমন বিষয় বাছুন যা আপনার শ্রোতাকে আনন্দ দেবে, আগ্রহী করবে, মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে বক্তব্যের গভীরতায়। তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়াল এই যে, আপনি ঠিক করে নিন তেমন বিষয়বস্তু, যাতে আপনার পুরোমাত্রায় অধিকার আছে অনেক কিছু বলার। যার ভেতর এবং বাইরের সবকিছুই সম্পূর্ণভাবে আপনি ওয়াকিবহাল। তাহলেই দেখবেন, আপনার ঘরে আপনি জমা করতে পারবেন অভিজ্ঞতা এবং সফলতার ফসল।

◼ আমি আমার নিজের জীবন থেকে একটি শিক্ষা নিয়েছি, যা আমি, সারা জীবন পালন করে চলব বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ! তা হলো-যদি কোনও বক্তা পরিপূর্ণভাবে অবহিত থাকে কি বিষয়ে কতটা কি বলছেন তিনি, তার ফলই-বা কি দাঁড়াচ্ছে যদি তিনি সেটাও পরিমাপ করতে পারেন, তা হলে তিনি নিশ্চিত হতে পারেন শ্রোতারা তাঁর বক্তব্যে রশীভূত হবেই। তিনি ক্রমশ এ নিয়ম পালন করবে এমন একটি সফলতার পাদপিঠে গিয়ে দাঁড়াবেন যে, তখন তিনি নোংরা ধূলাবালি বা ময়লা চুন বালি সিমেন্ট সুরকি থেকেও সবুজ ঘাস ফলাতে পারবেন।

◼ ভাল বক্তব্যের গুণে এমন হতে দেখা গেছে যুক্তিতর্কও বক্তার আবেগমুখর হৃদয়স্পর্শকারী বক্তৃতার বাণে ভেসে গেছে। বেশিরভাগ বক্তাই যে ভুলটা করেন তা হল, তিনি ভেবে নেন যে তিনি সব বিষয়েই ভাল বলবেন। এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে অনেক বক্তাকেই শ্রোতার সামনে লেজে-গোবরে হয়ে তোতলাতে দেখা যায়। রিচার্ড বুশলেন ছিলেন ইটালিতে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত। একবার তাঁর সঙ্গে নৈশভোজের টেবিলে আমি অনেকক্ষণ গল্পগুজব করার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমি তাঁকে কথায় কথায় জিজ্ঞাস করেছিলাম “আপনার অনুমতি পেলে আমি একটি একান্ত ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে পারি আপনাকে?” তিনি অনুমতি দিলেন। “আপনার রাষ্ট্রদৌত্য সম্পর্কিত কাজের বাইরেও কি করে আপনি একজন সার্থক লেখক হলেন? তিনি উত্তর দিলেন, “আমি আমার নিজের জীবন এত সংঘাতময় আবেগপ্রবণ উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে কাটাই যে অন্য কাউকে অভিজ্ঞতার সরাস্বাদন করাতে না পারলে নিজেকে অতৃপ্ত অসুখী মনে হয়। আমার সার্থকতার মূল প্রেরণার জন্ম এ থেকেই।” পাঠকরা নিজের জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন, দেখবেন কথাটা বর্ণে বর্ণে সত্যি।

◼ একবার লন্ডনে বিখ্যাত লেখক বেনসন সাহেবের বক্তৃতা শোনার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছিল। তিনি ছিলেন যেমন ভাল বক্তা, তেমনি শক্তিশালী লেখক। লেখক হিসেবে তাঁর বৈদগ্ধ এবং মননশীলতা সারা পৃথিবীর রুচিশীল পাঠকের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ আবেদন রাখতে সক্ষম হয়েছিল।

◼ তাঁর জীবনের সাফল্যের চাবিকাঠি জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন- আসলে আমার লেখার মধ্যে, অভিজ্ঞতার মধ্যে পাঠক নিজেকেই খুঁজে পান। স্বাধীনভাবে আমার লেখার মধ্যে ইতস্তত ভ্রমণ করেন। তাই বুঝতে পারছে, আনন্দ-উৎসাহ আর উদ্দীপনার খোরাক থাকে বলেই পাঠকেরা আমার লেখা পছন্দ করেন।

◼ অনেকদিন আগের কথা। ওয়াশিংটন ডি,সি-তে আমাদের ইনস্টিটিউশনের মিঃ হোমিংওয়ে বলে একজন মজার ছাত্র ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি প্রতিদিনই বক্তব্য রাখতেন নীরস যুক্তিতর্কের তথ্যের গালভরা পরিসংখ্যানের কচকচানিতে। নিজের সম্পর্কে মিঃ হোমিংওয়ের অদ্ভুত কিছু বাতিক বা ধ্যান ধারণা ছিল। যেমন তিনি দীর্ঘদিন ধরে ওয়াশিংটনের বাসিন্দা সেইহেতু এই শহর সম্পর্কে দুনিয়ার তথ্যযুক্তি পরিসংখ্যানের পাথর তিনি অবলীলায় শ্রোতাদের ছুঁড়ে মারতেন। একবারও ভেবে দেখতেন না যে শ্রোতারা এতে অধৈর্য্য, বিরক্ত এবং ক্রুদ্ধ হচ্ছেন। কোনদিন ভুলেও তিনি এই শহর সম্পর্কে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সম্বলিত কোন ঘটনার কথা বলতেন না, যা কিনা হয়ে উঠতে পারত মনোগ্রাহী ও আদরণীয়।

◼ এভাবেই চলছিল। চার-পাঁচ দিন পরের কথা। সেদিন বক্তব্য রাখার সময় হোমিংওয়ে খুবই উত্তেজিত ও আবেগপ্রবণ হয়ে উঠলেন। আসলে ঘটনাটা হয়েছিল কি-
হোমিংওয়ে রাস্তার ধারে গাড়ি পার্ক করে রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেতে ঢুকেছিলেন। খাওয়া-দাওয়া সাঙ্গ করে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে রাস্তা পা দিতে-না-দিতেই একটি গাড়ি উল্কার বেগে ছুটে এসে তাঁর গাড়ি ধাক্কা মেরে চুর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটা তাঁকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে তুলেছিল। রাগে, দুঃখে, শোকে তিনি শ্রোতাদের সামনে ফেটে পড়লেন, যা কিনা প্রতিটি শ্রোতার হৃদয়তন্ত্রীতে করাঘাত করেছিল। এই প্রথম শ্রোতারা তাঁকে ভালবাসল, গ্রহণ করল।

◼ এ ঘটনা থেকে আপনারা শিক্ষা নিন। সত্যিকার ভাবনা-বিষয় নিয়েই স্রোতার সামনে উপস্থিত হন। তাহলেই শ্রোতার মন জয় করতে সক্ষম হবেন। একটা কথা সর্বদা স্মরণ রাখবেন- আপনি শ্রোতার জন্য ভাবলেই শ্রোতাও আপনার জন্য ভাববে। একশ বছর পেরিয়ে গেছে। ওয়াশিংটনের ফোর্ড থিয়েটারে নাটক দেখতে দেখতে আততায়ীর গুলীতে নিহত হয়েছিলেন স্মরণীয় এবং বরণীয় প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন। তবু আজও প্রতিমুহুর্তে আমরা আমাদের বাক্যে, ব্যবহারে কাজের উদ্দীপনার মধ্যে লিঙ্কনকেই প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করে চলেছি। তাঁর বেঁচে থাকাকালীন ইতিহাসে তাঁর ব্যক্তিত্বকে ম্লান করতে পারার মত আর কেউ ছিলেন না। যদিও তাঁর বক্তব্যে আভিজাত্য, নমনীয়তা বা পরিশীলতা ছিল না, কিন্তু তাঁর বক্তব্য পাহাড়ের মত উদ্দীপনার আগুণ সঞ্চার করতে পারত। .

◼ আমার বইয়ের পাঠকরা-যাঁরা অনেকক্ষণ ধরে এ বই পড়ে চলেছেন তাঁদের অনেক শিক্ষা নেয়ার আছে প্রেসিডেন্ট লিঙ্কনের জীবন থেকে।

◼ আপনারা মনে মনে যা ভাবছেন সেটা আমি জানি- আমারতো কোন বিষয়েই ভাল জানা নেই, পড়াশোনা নেই তাহলে কি করে বিষয় নির্বাচন করব?

◼ আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমার বারবার একটি ছাত্রের কথা মনে পড়ছে। ছাত্রটি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল- কি বিষয় ঠিক করব? উত্তর দিয়েছিলাম ‘পায়রা’। ছাত্রটি অবাক হয়ে উচ্চারণ করেছিল পায়রা! আমি তাকে বললাম যাও— পায়রা সম্পর্কে ভাল করে জেনে এস। লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়াশোনা করে তৈরী হয়ে যাওয় বক্তৃতা দেয়ার জন্য।

◼ অবাক কাণ্ড, বক্তৃতার দিন ছেলেটি আধঘন্টা অনর্গল ‘পায়রা’ সম্পর্কে মজার মজার কথা বলেছিল। শ্রোতারা মুগ্ধ হয়েছিল। কারণ, ছেলেটি ‘পায়রা’ সম্পর্কে তথ্য নিয়েছিল চল্লিশটিরও বেশি বই ঘেঁটে। সেখানে নিষ্ঠা ছিল ফাঁকি ছিল না। তার সাফল্যের চাবিকাঠি ছিল সেটাই।

একবার যা পড়বেন তা খুবই জরুরী। বারবার পড়ুন। মনে রাখুন।

  • (১) বিষয় নির্বাচন শেষ হলে সে বিষয়ে যত বেশি পারে পড়াশোনা করুন। জানুন। চিনুন। শিখুন। ভাবুন।
  • (২) যত বেশি জানবেন তত বেশি ভাল বলবেন।
  • (৩) পড়াশোনার সময় নিষ্ঠার যেন অভাব না হয়।

আপনি যদি বিক্রয় প্রতিনিধি হন, তাহলে আপনি যে জিনিস নির্বাচন করবেন সে জিনিস সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিশদ জানার চেষ্টা করুন তাহলেই মাল বিক্রি করতে আপনি অনেক বেশি সফল হবেন। যত বেশি জানবেন তত বেশি ভাল বলবেন।

(খ) আপনার অভিজ্ঞতায় প্রাণসঞ্চার করুন

◼ ধরুন আপনি গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন, নিজের অজান্তেই নির্ধারিত গতিসীমার বাইরে চলে গেছেন। আইন লঙ্ঘনের অপরাধে পুলিশ আপনার গাড়ি থামাল। আপনাকে ধমক দিয়ে ছেড়ে দিল যাতে আপনি কখনো আইন অমান্য না করেন। এ ঘটনাটি যখন আপনি শ্রোতাদের কাছে বলবেন তখন যদি আপনি আগ্রহ-উদ্দীপনায় প্রাণবন্তভাবে পুরো সত্যি ঘটনাটা অবিকৃতভাবে বলে যেতে পারেন, তাহলেই শ্রোতার মন জয় করতে পারবেন। পুলিশ ধরার সময় আপনার যে মনের অবস্থা হয়েছিল তার যত সঠিক বর্ণনা আপনি দিতে পারবেন, তত বেশি শ্রোতারা প্রত্যেকেই আপনার সেই সময়কার মনের অবস্থা জানতে আগ্রহী হবে।

তাহলে মোদ্দা কথা হল— যখনই কিছু বলবেন— প্রাণ ঢেলে, অবিকৃতভাবে বলবেন সৎ ও আন্তরিকভাবে বলবেন। তাহলেই আপনার বক্তব্যের বিষয়বস্তুতে অপরের মন জয় করতে পারবেন।

(গ) যা বলবেন আন্তরিকতার সঙ্গে বলুন

◼ যখনই আপনি শ্রোতার সামনে কিছু বলছেন মনপ্রাণ ঢেলে নিষ্ঠার সঙ্গে তা বলুন। কারণ আপনি যা বলবেন তাতে যদি আপনারই আগ্রহ না থাকে তাহলে শ্রোতার আগ্রহ কি করে হবে? আপনারই কথায় যদি ঝর্ণাধারার গতিশীলতা থাকে তাহলে তা শ্রোতার মনকেও গতিময়তা দেবে। আপনি যা বলতে উৎসুক তা যদি হয় আন্তরিক তাহলে শ্রোতরাও তা শুনতে আগ্রহী হবে।

নিচের নির্দেশগুলো মেনে চললে আপনার জীবনে উপকার হবে।

  • (১) কথা বলার শুরুতেই প্রাণভরে পুরোদমে মুক্ত বাতাসে টেনে নিন। তাহলে দেখবেন ঝরঝরে লাগছে।
  • (২) মঞ্চের উপরকার আসবাবপত্র মাইকের হাতল থেকে নিজেকে দুরে রাখবেন।
  • (৩) মাথাকে সোজা এবং শক্ত রাখুন। চিবুক যেন কিছুতেই নিম্নমুখী না হয়।
  • (৪) পরিষ্কার, নির্ভুল উচ্চারণে এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বক্তব্য রাখবেন।
  • (৫) আপনি নিজে যত ভাল আচরণ করতে পারবেন তত ভাল আরচরণই
  • (৬) কেবলমাত্র শ্রোতাদের কাছ থেকে আশা করতে পারেন। মোটের উপর আপনার সদাচারই আপনাকে নিষ্ঠাবান করবে।

(এখন আপনি আছেন পর্ব-৪ এ)

পর্ব-১ : https://khamarian.com/বক্তব্যে-শ্রোতার-মন-জয়/

পর্ব-২ : https://khamarian.com/কিভাবে-আত্মবিশ্বাস-বাড়া/

পর্ব-৩ : https://khamarian.com/কথা-বলার-দক্ষতা-অর্জন-করু/

পর্ব-৪ : https://khamarian.com/সজীব-প্রাণবন্ত-কথা-বলুন/

পর্ব-৫ : https://khamarian.com/শ্রোতা-সঙ্গে-ভাব-বিনিময়/

পর্ব-৬ : https://khamarian.com/যা-বলতে-চান-গুছিয়ে-বলার-চ/

পর্ব-৭ : https://khamarian.com/কথায়-যোগাযোগ-স্থাপনের-ক/

পর্ব-৮ : https://khamarian.com/কথা-বলার-চ্যালেঞ্জ-গ্রহণ/

পর্ব-৯ : https://khamarian.com/কিভাবে-দীর্ঘক্ষণ-কথা-বলা/

সমাপ্তঃ আজকরে আলোচ্য বিষয় “সজীব প্রাণবন্ত কথা বলুনঃ কথা বলার দক্ষতা অর্জন করুনঃ বক্তব্যে শ্রোতাদের মন জয় করা সহজ উপায়, একজন সফল বক্তা হওয়ার উপায়, বক্তব্য ওয়ার নিয়ম ও ভাষণ দেওয়ার নিয়ম, কথা বলার কৌশল, কথা বলার জড়তা দূর করার উপায় (পর্ব-৪, লেখকঃ ডেল কার্নেগী, বই অনুবাদ)।” পরবর্তী পোষ্ট পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে এই পোষ্টটি এখানেই সমাপ্ত করা হলো।

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!