Skip to content

 

সরল, জটিল ও যৌগিক বাক্য (উদাহরণসহ বৈশিষ্ট্য) + সরল বাক্য থেকে জটিল, জটিল বাক্য থেকে সরল, সরল বাক্য থেকে যৌগিক যৌগিক বাক্য থেকে সরল, জটিল বাক্য থেকে যৌগিকে এবং যৌগিক বাক্য থেকে জটিল বাক্যের রূপান্তর।

সরল, জটিল ও যৌগিক বাক্য (উদাহরণসহ বৈশিষ্ট্য) + সরল বাক্য থেকে জটিল, জটিল বাক্য থেকে সরল, সরল বাক্য থেকে যৌগিক যৌগিক বাক্য থেকে সরল, জটিল বাক্য থেকে যৌগিকে এবং যৌগিক বাক্য থেকে জটিল বাক্যের রূপান্তর।

সরল, জটিল ও যৌগিক বাক্যঃ

গঠন-বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাংলা বাক্যকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়: সরল বাক্য, জটিল বাক্য ও যৌগিক বাক্য।

নিচের বাক্যগুলো লক্ষ করা যাক:

আমি পড়াশোনা শেষ করে খেলতে যাব।

যখন আমার পড়াশোনা শেষ হবে, তখন আমি খেলতে যাব।

আমি পড়াশোনা শেষ করব; তারপর খেলতে যাব।

প্রথম বাক্যে একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া আছে। এটি সরল বাক্য। দ্বিতীয় বাক্যের দুটি অংশ ‘যখন’ ও ‘তখন’ যোজক দ্বারা যুক্ত হয়েছে। এটি জটিল বাক্যের উদাহরণ। তৃতীয় বাক্যে ‘করব’ ও ‘যাব’ দুটি সমাপিকা ক্রিয়া রয়েছে। এটি একটি যৌগিক বাক্য।

১. সরল বাক্য

যে বাক্যে একটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে।

যেমন – 

পাখিগুলো নীল আকাশে উড়ছে।

তিনি ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন।

সরল বাক্যে অনেক সময়ে ক্রিয়া অনুপস্থিত থাকে।

যেমন –

আমরা তিন ভাইবোন।

বাক্যের মধ্যে এক বা একাধিক অসমাপিকা ক্রিয়া থাকলেও সরল বাক্য হয়।

যেমন – 

তিনি খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে পায়চারি করতে করতে বাজারের দিকে গেলেন।

২. জটিল বাক্য

যে-সে, যারা-তারা, যিনি তিনি, যাঁরা তাঁরা, যা-তা প্রভৃতি সাপেক্ষ সর্বনাম এবং যদি তবে, যদিও-তবু, যেহেতু-সেহেতু, যত-তত, যেটুকু-সেটুকু, যেমন-তেমন, যখন-তখন প্রভৃতি সাপেক্ষ যোজক দিয়ে যখন অধীন বাক্যগুলো যুক্ত থাকে, তাকে জটিল বাক্য বলে।

যেমন – 

যে ছেলেটি এখানে এসেছিল, সে আমার ভাই।

যদি তুমি যাও, তবে তার দেখা পাবে।

যখন বৃষ্টি নামল, তখন আমরা ছাতা খুঁজতে শুরু করলাম।

৩. যৌগিক বাক্য

দুই বা ততোধিক স্বাধীন বাক্য যখন যোজকের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে একটি বাক্যে পরিণত হয়, তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে। এবং, ও, আর, অথবা, বা, কিংবা, কিন্তু, অথচ, সেজন্য, ফলে ইত্যাদি যোজক যৌগিক বাক্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কমা (,), সেমিকোলন (;), কোলন (:), ড্যাশ (-) ইত্যাদি যতিচিহ্নও যোজকের কাজ করে।

যেমন – 

হামিদ বই পড়ছে, আর সীমা রান্না করছে।

সে ঘর ঝাড়ু দিল, ঘর মুছল, তারপর পড়তে বসল।

অন্ধকার হয়ে এসেছে – বন্ধুরাও মুখ ভার করে রইল।

তোমরা চেষ্টা করেছ, কিন্তু আশানুরূপ ফল পাওনি – এতে দোষের কিছু নেই।

বাক্যের রূপান্তরঃ

বাক্যের মূল অর্থ অপরিবর্তিত রেখে সরল, জটিল ও যৌগিক বাক্যের পারস্পরিক রূপান্তর করা সম্ভব।

ক. সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্য

যে-সে, যিনি-তিনি, যারা তারা, যা-তা ইত্যাদি সাপেক্ষ সর্বনাম এবং যদি-তবে, যেহেতু-সেহেতু, যখন- তখন, যত-তত, যেমন-তেমন ইত্যাদি সাপেক্ষ যোজক যুক্ত করে সরল বাক্যকে জটিল বাক্যে রূপান্তরিত করা যায়।

যেমন – 

সরল বাক্য: দুর্জন লোক পরিত্যাজ্য।

জটিল বাক্য: যেসব লোক দুর্জন, তারা পরিত্যাজ্য।

সরল বাক্য: তুমি চেষ্টা না করায় ব্যর্থ হয়েছ।

জটিল বাক্য: যেহেতু তুমি চেষ্টা করোনি, তাই ব্যর্থ হয়েছ।

খ. জটিল বাক্য থেকে সরল বাক্য

জটিল বাক্যকে সরল বাক্যে রূপান্তরের সময়ে সাপেক্ষ সর্বনাম ও সাপেক্ষ যোজককে বাদ দিতে হয়।
যেমন – 

জটিল বাক্য: যারা পরিশ্রম করে, তারা জীবনে সফল হয়।

সরল বাক্য: পরিশ্রমীরা জীবনে সফল হয়।

জটিল বাক্য: যখন সে সুসংবাদটা পেল, তখন সে আনন্দিত হলো।

সরল বাক্য: সুসংবাদটা পেয়ে সে আনন্দিত হলো।

গ. সরল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্য

যৌগিক বাক্যে একাধিক সমাপিকা ক্রিয়ার প্রয়োজন হয়। এজন্য সরল বাক্যকে যৌগিক বাক্য করতে সরল বাক্যের মাঝখানের অসমাপিকা ক্রিয়াকে সমাপিকা ক্রিয়ায় রূপান্তর করতে হয়। সরল বাক্যে একটিমাত্র ক্রিয়া থাকলে যৌগিক বাক্য গঠনের সময়ে আরেকটি ক্রিয়া তৈরি করে নিতে হয়।

যেমন – 

সরল বাক্য: তুমি চেষ্টা না করায় ব্যর্থ হয়েছ।

যৌগিক বাক্য: তুমি চেষ্টা করোনি, তাই ব্যর্থ হয়েছ।

সরল বাক্য: ভিক্ষুককে টাকা দাও।

যৌগিক বাক্য: কিছু লোক ভিক্ষা করে, ওদের টাকা দাও।

ঘ. যৌগিক বাক্য থেকে সরল বাক্য

যৌগিক বাক্যে দুটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকে; অন্যদিকে সরল বাক্যে থাকে একটি সমাপিকা ক্রিয়া। তাই যৌগিক বাক্য থেকে সরল বাক্যে রূপান্তরের সময়ে মাঝখানের সমাপিকা ক্রিয়াকে অসমাপিকা ক্রিয়ায় রূপান্তর করে নিতে হয়।

যেমন – 

যৌগিক বাক্য: সে এখানে এল এবং সব কথা খুলে বলল।

সরল বাক্য: সে এখানে এসে সব কথা খুলে বলল।

যৌগিক বাক্য: লোকটি অশিক্ষিত, কিন্তু অভদ্র নয়।

সরল বাক্য। লোকটি অশিক্ষিত হলেও অভদ্র নয়।

ঙ. জটিল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্য

জটিল বাক্যের সাপেক্ষ সর্বনাম ও সাপেক্ষ যোজক বাদ দিয়ে যৌগিক বাক্য তৈরি করতে হয়। যৌগিক বাক্যে একাধিক সমাপিকা ক্রিয়া থাকে।

যেমন – 

জটিল বাক্য: যখন বিপদ আসে, তখন দুঃখও আসে।

যৌগিক বাক্যঃ বিপদ ও দুঃখ একসঙ্গে আসে।

জটিল বাক্য: যদি নিয়মিত সাঁতার কাটো, তবে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

যৌগিক বাক্য: নিয়মিত সাঁতার কাটো, স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

চ. যৌগিক বাক্য থেকে জটিল বাক্য

যৌগিক বাক্যকে জটিল বাক্যে রূপান্তর করার সময়ে যৌগিক বাক্যের যোজক বাদ দিতে হয়। এর বদলে

সাপেক্ষ সর্বনাম ও সাপেক্ষ যোজক যুক্ত হয়।

যেমন – 

যৌগিক বাক্য: ছেলেটির বয়স অল্প; কিন্তু বেশ বুদ্ধিমান।

জটিল বাক্য: যদিও ছেলেটির বয়স অল্প, তবু বেশ বুদ্ধিমান।

যৌগিক বাক্য: দোষ করেছ; অতএব শাস্তি পাবে।

জটিল বাক্য: যেহেতু দোষ করেছ, সেহেতু শাস্তি পাবে।

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!