Skip to content

 

কখন সালাম দেওয়া যাবে না? সালাম, মুসাফাহ ও মুআনাকা করার নিয়ম, সুন্নাত এবং আদব সমূহ

কখন সালাম দেওয়া যাবে না? সালাম, মুসাফাহ ও মুআনাকা করার নিয়ম, সুন্নাত এবং আদব সমূহ

বিষয়: কখন সালাম দেওয়া যাবে না? সালাম, মুসাফাহা ও মুআনাকা করার নিয়ম, সুন্নাত এবং আদব সমূহ।
হ্যাশট্যাগ: #কখন সালাম দেওয়া যাবে না #সালামের সুন্নাত ও আদব সমূহ #মুসাফাহা করার নিয়ম, #মুআনাকা করার নিয়ম

সালাম দেওয়া/প্রদান সংক্রান্ত সুন্নাত ও আদবঃ

* আগে সালাম দিবে। এটাই উত্তম, কেননা যে প্রথমে সালাম প্রদান করবে যে অধিক ছওয়াবের অধিকারী হবে।

* পরিচিত-অপরিচিত, ছোট-বড় নির্বিশেষে সকলকে সালাম দিবে। মাতা-পিতা, স্ত্রী, পুত্র পরিজন সকলকেই সালাম করবে।

* সওয়ারী ব্যক্তি পায়ে চলা ব্যক্তিকে, চলনেওয়ালা বসা বা দাঁড়ানো ব্যক্তিকে, আগন্তুক অবস্থানকারীকে, কম সংখ্যক লোক অধিক সংখ্যকদেরকে এবং কম বয়সী অধিক বয়সীকে অগ্রে সালাম করা উত্তম। জামা’আতের মধ্য থেকে একজন সালাম করলে সকলের পক্ষ থেকে তা যথেষ্ট হবে।

* সালামের সময় হাত দিয়ে ইশারা করবে না বা হাত কপালে ঠেকাবে না কিংবা মাথা ঝুঁকাবে না। তবে দূরবর্তী লোককে সালাম করলে-যার পর্যন্ত আওয়াজ না পৌঁছার সম্ভাবনা রয়েছে- সেরূপ ক্ষেত্রে শুধু বোঝানোর জন্য হাত দিয়ে ইশারা করা যে পারে। (উসা

* মাতা-পিতা বা গুরুজন ও বড়কে সালাম করার সময় আওয়াজ এবং ভাব-ভঙ্গির মধ্যে আদব ও সম্মান ফুটে ওঠা উচিৎ। এমনিভাবে ছোট ও স্নেহভাজনকে সালামের ক্ষেত্রে স্নেহ ব্যক্ত হওয়া সংগত।

* অমুসলিমকে সালাম করবে না। তবে বিশেষ স্বার্থে বা তার অনিষ্টতা থেকে রক্ষার প্রয়োজনে একান্ত কিছু বলে যদি তাকে অভিবাদন জানাতেই হয়, তাহলে ‘গুডমর্নিং’, ‘গুডইভিনিং’ বা ‘শুভ-সকাল’ ‘শুভ সন্ধা’ ইত্যাদি কিছু বলে অভিবাদন করা যায়।

* কোন মজলিসে মুসলিম অমুসলিম উভয় প্রকারের লোক থাকলে মুসলমানদের নিয়তে সালাম দিবে কিংবা নিম্নরূপ বাক্যেও সালাম দেয়া যায়-

السّلام علی من اتبع الهدی۔

অর্থঃ যারা হেদায়েত তথা ইসলামের অনুসরণ করেছে, তাদের প্রতি সালাম।

* কোন খালি ঘরে প্রবেশ করলে সেখানেও সালাম দিবে।

* ছাত্রদেরকে কুরআন বা দ্বীনী কিতাব তা’লীম দানে রত উস্তাদকে কেউ সালাম করলে তিনি জবাব দেয়া না দেয়া উভয়টার অবকাশ রাখেন।

কখন সালাম দেওয়া যাবে না?

* নিম্নোক্ত ব্যক্তিদেরকে সালাম দেয়া নিষিদ্ধ (মাকরূহ) এরূপ ব্যক্তিদেরকে সালাম প্রদানকারী সালামের উত্তর পাওয়ার হকদার হয় না।

ক. কোন পাপ কাজে রত ব্যক্তি/ব্যক্তিগণকে; যেমন জুয়া বা দাবা খেলায় রত ব্যক্তিকে।

খ. পেশাব-পায়খানায় রত লোককে।

গ. পানাহার রত ব্যক্তিকে (অর্থাৎ, তার মুখে খাদ্য/পানীয় থাকা অবস্থায়)।

ঘ. ইবাদত যেমন নামায, তিলাওয়াত, আযান ও ইকামত প্রদানে এবং দ্বীনী কিতাব আলোচনায় রত ব্যক্তি বা যিকির ওজীফায় রতদেরকে।

ঙ. কোন মজলিসে বিশেষ কথা-বার্তা বলার মুহূর্তে কথা-বার্তায় ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকলেও সালাম করা উচিত নয়।

চ. গায়র মাহরাম নারী-পুরুষের মধ্যে যেসব ক্ষেত্রে ফেতনার আশংকা থাকে সেখানে সালাম আদান প্রদান নিষিদ্ধ।

সালামের উত্তর/জবাব প্রদান সংক্রান্ত সুন্নাত ও আদবঃ

* সালামের জবাব দেয়া ওয়াজিব। জামাআতের মধ্য থেকে একজন জবাব দিলে সকলের পক্ষ থেকে যথেষ্ট হবে।

* সালামের জবাব শুনিয়ে দেয়া জরুরী। (যদি সালাম দাতা নিকটে থাকেন) আর যদি সালাম দাতা দূরে থাকেন, তাহলে মুখে জবাব দেয়ার সাথে সাথে ইশারা দ্বারাও তাকে অবহিত করবে, বিনা প্রয়োজনে ইশারা করবে না, মাথা ঝুঁকাবে না।

* সালাম দাতা (আসসালামু আলাইকুম) বললে তার জবাবে “ওয়া লাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ” বলা উত্তম৷ বরং “ওয়া বারাকাতুহ” বৃদ্ধি করে দিলে আরও উত্তম। আর সালামদাতা ওয়া রহমাতুল্লাসহ সালাম দিলে তার জবাবে ওয়া বারাকাতুহু বৃদ্ধি করে দেয়া উত্তম

* আওয়াজ ও ভাব-ভঙ্গির ক্ষেত্রে পূর্বোক্ত নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

* কোন অমুসলিম আস্সালামু আলাইকুম বলে সালাম দিলে তার জবাবে শুধু বলবে “ওয়া আলাইকুম” অথবা শুধু ইশারা করে দিলেও যথেষ্ট।

* একই সঙ্গে দুই জন একে অপরকে সালাম দিলে প্রত্যেককেই আবার জবাব দিতে হবে। তবে আগে পরে হলে পরেরটা জবাব এবং আগেরটা সালাম বলে গণ্য হবে এবং কাউকেই আর জবাব দিতে হবে না।

মুসাফাহার সুন্নাত ও আদব সমূহঃ

মুসাফাহা করা সুন্নাত। সাক্ষাতের প্রাক্কালে মুসাফাহা করতে হয়। বিদায়ের সময়ও মুসাফাহা হতে পারে।

* উভয় হাত যোগে মুসাফাহা করা সুন্নাত। অনন্যোপায় অবস্থায় ব্যতীত এক হাতে মুসাফাহা করা সুন্নাতের খেলাফ এবং তাকাব্বুর তথা অহংকারের আলামত।

* মুক্ত হাতে মুসাফাহা করা সুন্নাত অর্থাৎ, মুসাফাহার সময় হাতের মাঝে কাপড় প্রভৃতির অন্তরায় থাকতে পারবে না।

* মুসাফাহার মধ্যে হাদিয়ার টাকা হাতে গুঁজে দেয়া পছন্দনীয় নয়।

* মুসাফাহার পর নিজের হাতে চুমু দেয়া বা নিজের হাত বুকের উপর ফিরানো সুন্নাতের খেলাফ ও বিদআত।

* কারও সঙ্গে এমন সময় মুসাফাহার জন্য হাত বাড়াবে না, যখন তার কোন ব্যস্ততা বা লিপ্ততার কারণে মুসাফাহার জন্য হাত অবসর করতে সে বিব্রতবোধ করতে পারে।

* কোন মজলিসে যেয়ে সকলের সঙ্গে একাধারে মুসাফাহা করতে গিয়ে মজলিসের ধারাবাহিকতায় বিঘ্ন ঘটানো অনুচিত। এরূপ ক্ষেত্রে একজনের সাথে বা যার উদ্দেশ্যে সে গিয়েছে তার সাথে মুসাফাহা করার উপরই ক্ষ্যান্ত করবে।

* মুসাফাহা করতে গিয়ে কাউকে কষ্ট দেয়া অনুচিত; কেননা মুসাফাহা করা সুন্নাত আর কাউকে কষ্ট দেয়া হারাম। সুন্নাত আদায় করতে যেয়ে হারাম করার অনুমতি নেই।

* মুসাফাহা হল সালামের পরিপূরক, অতএব যেসব লিপ্ততার সময় সালাম থেকে বিরত থাকার নিয়ম, মুসাফাহার ক্ষেত্রেও সে নিয়ম প্রযোজ্য।

(ماخوذ از اسلامی تہذیب تعلیم الدین جواہر الفقہ واز آداب المعاشرت نقلا عن البحر والفتاوى الهندية والشامي)

মুআনাকা মাসায়েল সুন্নাত ও আদবঃ

* বড়দের প্রতি আজমত এবং ছোটদের প্রতি শফকত ও মহব্বতের সাথে মুআনাকা অর্থাৎ, গলাগলি বা কোলাকুলি করা যেতে পারে, এটা জায়েয বরং সুন্নাত।

* সাধারণ ভাবে তিন ক্ষেত্রে মুআনাকা করা জায়েয নয়।

(১) যেখানে নিজের মধ্যে শাহওয়াত থাকে কিংবা নিজের মধ্যে বা অপর পক্ষের মধ্যে শাহওয়াত এসে যাওয়ার আশংকা থাকে (তবে বিবির ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা।

(২) মুআনাকা করতে গেলে যদি কাউকে কষ্ট দেয়া হয়।

(৩) ঈদের দিন মুআনাকা করা ৷ এটা বিদআত।

* মুআনাকাকারী উভয়ে প্রথমে ডান গলা মিলাবে।

* মুআনাকা শুধু এক দিকেই যথেষ্ট, তিনবার করা জরুরী নয়।

সমাপ্ত: কখন সালাম দেওয়া যাবে না? সালাম, মুসাফাহা ও মুআনাকা করার নিয়ম, সুন্নাত এবং আদব সমূহ।
সূত্র: আহকামে যিন্দেগী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!