Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

6 টি মাছ চাষের পদ্ধতি

6 টি মাছ চাষের পদ্ধতি

বিষয়: মাছ চাষের পদ্ধতি 6 টি নিয়ে আলোচনা।
হ্যাশট্যাগ:#মাছ চাষের পদ্ধতি।

বাংলাদেশে পুকুর-দীঘি, খাল-বিল এবং নদী-নালাসহ বিভিন্ন ধরনের জলাশয় আছে। বিভিন্ন ধরনের জলাশয়ে মাছ চাষের পদ্ধতিও ভিন্ন রকমের। জলাশয়ের উপযোগী মাছ চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে অধিক উৎপাদন পাওয়া যাবে। নিম্নে 6 টি মাছ চাষের পদ্ধতি সংক্ষিপ্ত ও সহজ করে বর্ণনা করা হলো।

(1) পুকুরে মাছ চাষ

  • দেশে ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের প্রায় ১৩ লক্ষ পুকুর আছে। সব পুকুরে সব মাছ চাষ করা যায় না। যে সব পুকুরে সারা বছর পানি থাকে সেগুলোকে ‘স্থায়ী পুকুর’ বলা হয়।
  • যেসব পুকুরে শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে যায় সেগুলোকে ‘মৌসুমী পুকুর’ বলে।
  • ছোট আকারের মৌসুমী পুকুরে রাজপুটি, নাইলোটিকা ও আফ্রিকান মাগুর মাছের চাষ করা যায়।
  • এক-দেড় মিটার গভীর পুকুরে চিংড়ির চাষও করা যায়। এ ধরনের ছোট আকারের মৌসুমী পুকুরে শিং মাগুর মাছের চাষও করা যায়।
  • যে সব পুকুরের আয়তন ৩০ শতক বা বেশি সে সব পুকুর রুই-কাতলা মাছ এবং বিদেশি কার্প মাছ চাষের জন্য উপযোগী। মাছ চাষ করার জন্য পুকুর প্রথমে প্রস্তুত করে দিতে হয়। তারপর পোনা মজুদ করে নিয়মিত সার ও সম্পূরক খাদ্য দিয়ে পরিচর্যা করতে হয়।

(2) খাঁচায় মাছ চাষ

  • সাধারণত মুক্ত জলাশয় যেমন নদীতে, খালে, বাওড়ে বা বড় কোনো জলাশয়ে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হয়। এ সব জলাশয়ে খাঁচা পেতে তার মধ্যে পোনা ছেড়ে খাবার যোগ্য মাছ উৎপাদন করা হয়।
  • বাঁশের বাতা দিয়ে বা নাইলনের মোটা সুতার জাল দিয়ে খাঁচা তৈরি করা যায়।
  • খাঁচার আকার সাধারণত ২ থেকে ৫ মিটার দৈর্ঘ্য, ২ মিটার প্রস্থ ও ২ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট হয়।
  • যে সব মাছ বাইরে থেকে সরবরাহ করা খাবার ভালোভাবে খায় সে সব মাছ খাঁচায় চাষের উপযোগী।
  • রুই, মৃগেল, কমন্‌কার্প, গ্রাস্কার্প, নাইলোটিকা, রাজপুটি, শিং এবং মাগুর ইত্যাদি খাঁচায় চাষ উপযোগী মাছ।
  • এসব মাছের একটু বড় আকারের পোনা খাঁচায় মজুদ করতে হয়।
See also  রুই, মৃগেল, কাতলা ও কালবাউস মাছের পোনা চেনার উপায় + মৃগেল, কালবাউস, কাতলা ও রুই মাছ চাষ এর পোনা সংগ্রহ ও পরিবহনের নিয়ম + পোনা ওজন ও গণনার নিয়ম আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ#মাছ চাষের পদ্ধতি#মাছ চাষ করার সহজ উপায়#মাছ চাষ কিভাবে করা যায়#আধুনিক পদ্ধতিতে মাছের পোনা পরিচর্যা

(3) চৌবাচ্চায় মাছ চাষ

  • শহর অঞ্চলে পুকুর কম। এজন্য শহরে ট্যাঙ্ক বা চৌবাচ্চায় মাছ চাষ করা যায়।
  • চৌবাচ্চার আকার ১০-১২ বর্গমিটার এবং গভীরতা ১ মিটার হলে তাতে মাছ চাষ করা যায়।
  • যে সব মাছ দ্রুত বাড়ে, বাইরে থেকে দেওয়া খাবার খায়, সেগুলোকে চৌবাচ্চায় মাছ চাষের ক্ষেত্রে মাছকে পরিমিত পরিমাণ গুণগত মানসম্পন্ন খাদ্য নিয়মিত সরবরাহ করতে হবে এবং মাঝে মাঝে চৌবাচ্চার পানি পরিবর্তন করে দিতে হবে।

(4) ধানক্ষেতে মাছ চাষ

  • বাংলাদেশের প্রধান ফসল ধান। কৃষি জমির প্রায় ৭৫ ভাগেই ধান চাষ করা হয়।
  • আমন মৌসুমে যে সব মাঝারি নিচু জমিতে ৩-৪ মাস পানি থাকে সেখানে মাছ চাষ করা যায়।
  • ধান ক্ষেতে রাজপুটি, নাইলোটিকা, কমনকার্প, মাগুর ও চিংড়ি চাষ করা যায়।
  • ধানক্ষেত্রে মাছ চাষ করতে হলে ক্ষেতের চারদিকে উঁচু আইল তৈরি করতে হবে।
  • জমির মাঝ দিয়ে সমান্তরাল কিছু নালা কাটা হয়। মাছ সাধারণত এসব নালায় অবস্থান করে। তবে তারা মাঠে খাদ্যের অন্বেষণে বিচরণ করে। মাঠের পানি কমে গেলে মাছ নালায় আশ্রয় নেয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে মাছ আহরণ করা হয়।

ধান ক্ষেতে মাছ চাষের সুবিধা: ধানক্ষেতে মাছ চাষ করলে এ বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়-

  1. একই জমি থেকে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে মাছ পাওয়া যায়।
  2. মাছ চাষের জন্য আলাদাভাবে পুকুর তৈরির প্রয়োজন হয় না।
  3. অবস্থিত জলজ আগাছা সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  4. মাছ ধানের অনিষ্টকারী কীট পতঙ্গ খেয়ে ফেলে।

(5) সমন্বিত মাছ চাষ

  • পুকুরের পাড়ে অন্য কোনো শস্য বা সবজি চাষ বা পশু-পাখি পালন করাকে ‘সমন্বিত মাছ চাষ’ বলা হয়। দেশে প্রায় সব বাড়িতে হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগল প্রতিপালন করা হয়।
  • গোবর ও হাঁস -মুরগির বিষ্ঠা মাছ চাষে সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বাড়িতে হাঁস-মুরগি, গরু- ছাগল এবং সেই সাথে একটি পুকুর থাকলে সহজেই এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা যায়।
  • পুকুরের পাড়ে বা পানির উপর ঘর করে সেখানে হাঁস-মুরগি পালন করা যায়।
  • সাধারণত ৩৩ শতাংশ পুকুরের জন্য ৭০-৮০টি মুরগি অথবা ৫০-৬০টি হাঁস পালন করা যায়।
  • পানির উপর মুরগির ঘর করলে খাবার সময় মুরগির উচ্ছিষ্ট খাবার পানিতে পড়ে, মাছ তা খেয়ে থাকে।
  • মুরগির বিষ্ঠা পানিতে পড়ে সারের কাজ করে। সমন্বিত মাছ চাষের পুকুরে বিঘাপ্রতি ৮-১০ সেন্টিমিটার আকারের প্রায় ১,০০০টি রুই জাতীয় মাছের পোনা ছাড়া হয়।
  • মাছ ও মুরগির সমন্বিত চাষের পুকুরে সাধারণত সার দেওয়ার দরকার হয় না।
  • পুকুরে পোনা মজুদের পূর্বে পুকুরের প্রস্তুতি কাজ সাধারণ মাছ চাষ পদ্ধতির মতোই।
See also  পেনে মাছ চাষ, পেন-কালচার মাছ চাষের পদ্ধতি/নিয়ম

(6) মাছ ও মুরগির সমন্বিত চাষ

  • মাছের পোনা সংগ্রহের উৎস: চাষযোগ্য মাছের ক্ষেত্রে ডিম ফোটার পর প্রায় ১০ সেন্টিমিটার লম্বা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বাচ্চা মাছকে ‘পোনা মাছ’ বলা হয়।
  • দেশি কার্প জাতীয় মাছের ডিম পোনা স্বাভাবিকভাবে নদীতে পাওয়া যায়। এরা বদ্ধ পানিতে ডিম পাড়ে না। তবে সব নদীতে পোনা পাওয়া যায়।
  • ডিম-পোনা সংগ্রহকারীরা বিশেষ ধরনের জাল দিয়ে নদী থেকে ডিম-পোনা ধরে। এ ডিম পোনাকে পুকুরে পরিচর্যা করে বড় পোনা উৎপন্ন করা হয়।
  • বর্ষাকালে নদী থেকে ডিম পোনা খাল, বিল, বাওড় ও হাওড়ে প্রবেশ করে। ফলে খাল- বিল থেকেও বড় পোনা পাওয়া যায়।
  • প্রাকৃতিক উৎস ছাড়াও আজকাল হ্যাচারিতে কৃত্রিম উপায়ে দেশি ও বিদেশি কার্প জাতীয় মাছের ডিম-পোনা উৎপাদন করা হচ্ছে। এসব হ্যাচারিতে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিল্ভার কার্প, গ্রাস্ কার্প, কমন্ কার্প, আফ্রিকান মাগুর, রাজপুটি, পাঙ্গাস প্রভৃতি মাছের পোনা উৎপন্ন করা হচ্ছে।
  • হ্যাচারি থেকে চাষীরা এসব রেণু -পোনা নিয়ে পুকুরে বড় পোনা উৎপন্ন করে। দেশে বহু সরকারি ও বেসরকারি মাছের হ্যাচারি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!