Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

শবে বরাতের নামাজ (sobe borat namaj)

শবে বরাতের নামাজ (sobe borat namaj)

শবে বরাতের নামাজ (sobe borat namaj) ‘শব’ শব্দের অর্থ ‘রাত’ আর ‘বরাত’ হচ্ছে ‘ভাগ্য বা সৌভাগ্য’। অর্থাৎ শবে বরাত হচ্ছে সৌভাগ্যের রাত বা রজনী। মহিমান্বিত ও অতি পবিত্র এই রজনীতে পরম করুনাময় আল্লাহ রাব্বুল আল আমীন তাঁর সৃষ্ট জীবের গুনাহ মাপ ও ভাগ্য নির্ধারন করেন। তাই এই রাতকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ইবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে পালন করেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের শবে বরাতের পরিপূর্ণ সওয়াব ও ফজিলত লাভ করার তাওফিক দিন।

শবে বরাতের করণীয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার কাছে শাবান মাসের রোজা অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়। যখন তোমাদের কাছে শাবানের রাত (শবে বরাত) হাজির হবে, তখন তোমরা সেই রাতটি জাগ্রত থাকো (নামাজ পড়ে, কোরআন তেলাওয়াত করে, তাসবিহ পড়ে, জিকির করে, দোয়া করে) এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। কারণ, এ রাতে মহান আল্লাহ সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে এসে ঘোষণা করেন, আছে কি এমন কোনো ব্যক্তি যে তার গুনাহ মাফের জন্য আমার কাছে প্রার্থনা করবে? আমি তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেব। আছে কি এমন কোনো রিজিক প্রার্থনাকারী, যে আমার কাছে রিজিক প্রার্থনা করবে? আমি তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেব। আছে কি এমন কোনো বিপদগ্রস্ত, যে আমার কাছে বিপদ থেকে মুক্তি চাইবে? আমি তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করব। এভাবে সারারাত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ঘোষণা হতে থাকে এবং বান্দার ওপর বৃষ্টির মতো রহমত নাজিল হতে থাকে। (ইবনে মাজাহ : ১৩৮৪, বায়হাকি : ৩৮২৩)

শবে বরাতের নামাজ এর ফজিলত

মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মতে, এ রাতে বহু সংখ্যক বান্দা আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও আশীর্বাদ লাভ করে জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি লাভ করেন। তাই, এ রজনীকে আরবিতে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বা ‘নিষ্কৃতি/মুক্তির রজনী’ বলা হয়।

এই রাত্রি সম্পর্কে হযরত মোহাম্মদ (সা:) বলেন, ‘এই রাত্রিতে এবাদত-কারিদের গুনাহরাশি আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করে দেন। তবে কেবল আল্লাহর সাথে শিরককারী, সুদখোর,গণক, যাদুকর, কৃপণ, শরাবী, যিনাকারী এবং পিতা-মাতাকে কষ্টদানকারীকে আল্লাহ মাফ করবেন না।’

See also  তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম , বাংলা উচ্চারণ সহ নিয়ত, দোয়া এবং পড়ার ফজিলত + তাহাজ্জুদের নামাজ সংক্রান্ত 6টি প্রশ্নের উত্তর (সংক্ষিপ্ত)

শবে বরাতে নফল নামাজের নিয়ম

শবে বরাতে নফল নামাজের নিয়ম হলো, অন্য নফল নামাজের মতোই দুই রাকাত করে নামাজ পড়া।

প্রতি রাকাতেই সুরা ফাতেহার পর পবিত্র কোরআনের যে কোনো সুরা পড়া। এরপর যথানিয়মে রুকু-সিজদা করা এবং অন্য রুকনগুলো আদায় করা। এভাবে দুই রাকাত নামাজ শেষ করা। 

দুই বা চার রাকাত নামাজ পড়ার পর কিছু সময় দোয়া-দরুদ, তাসবি-তাহলিল পড়া, জিকির করা, কোরআন তেলাওয়াত করা। এরপর আবার নামাজে দাঁড়ানো। নামাজের পর আবার জিকির-আজকার, কোরআন তেলাওয়াত, তাওবা-ইস্তেগফার করা, দীনি আলোচনা শোনা, কোরআন-হাদিসের ব্যাখ্যা পড়া ইত্যাদি।

এভাবে সাধ্য অনুযায়ী যত রাকাত নামাজ পড়া যায় পড়তে পারেন। রাকাতেরও নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই।

পবিত্র কুরআনে যথাসাধ্য নফল ইবাদত করার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা সাধ্যের বাইরে কোনো কিছু চাপিয়ে দেন না। এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি কোনোটাই করা যাবে না। এই নিয়মটি এজন্য বলা হলো যে, একাধারে একটি আমল করতে থাকলে হয়তো কারো কারো একঘেয়েমি আসতে পারে, তাই পরিবর্তন করে আমলগুলো করে এই বরকতময় রাতটি ইবাদতে কাটিয়ে দেওয়া সহজ হবে।

ইসলামে নফল নামাজ পড়ার নির্দিষ্ট নিয়ম বানিয়ে নেওয়া সম্পূর্ণ নতুন আবিষ্কৃত বিদআত। এ ব্যাপারে সব যুগের সব আলেম একমত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং খোলাফায়ে রাশেদিনের সাহাবায়ে কেরাম কখনো তা পড়েননি।

এ রাতে যেহেতু দীর্ঘ সময় পাওয়া যায়, তাই আমরা ফজিলতময় নামাজ সালাতুত তাসবিহ পড়তে পারি। এই নামাজ জীবনে একবার হলেও পড়ার তাগিদ রয়েছে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আব্বাস ইবনে আব্দিল মুত্তালিব (রা.)-কে বলেছেন, হে চাচা! আমি কি আপনাকে দেব না? আমি কি আপনাকে প্রদান করব না? …আপনি চার রাকাত নামাজ পড়বেন। প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহা ও অন্য একটি সুরা পড়বেন। প্রথম রাকাতে যখন কেরাত পড়া শেষ করবেন তখন দাঁড়ানো অবস্থায় ১৫ বার বলবেন- সুবহানাল্লাহ, ওয়াল হামদু লিল্লাহ, ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার। এরপর রুকুতে যাবেন এবং রুকু অবস্থায় দোয়াটি ১০ বার পড়বেন। এরপর রুকু থেকে মাথা উঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদায় যাবেন। সিজদা অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা উঠাবেন এরপর ১০ বার পড়বেন। এরপর আবার সিজদায় যাবেন এবং সিজদা অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা উঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এ হলো প্রতি রাকাতে ৭৫ বার। আপনি চার রাকাতেই অনুরূপ করবেন।

(আবু দাউদ: হাদিস ১২৯৭, ইবনে মাজাহ: হাদিস ১৩৮৭, বায়হাকি কুবরা: হাদিস ৪৬৯৫)

যদি আপনি প্রতিদিন আমল করতে পারেন, তবে তা করুন। আর যদি না পারেন, তবে প্রতি জুমাবারে একবার। যদি প্রতি জুমাবারে না করেন, তবে প্রতি মাসে একবার। আর যদি তা-ও না পারেন, তবে জীবনে একবার।

See also  শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নামায পড়ার নিয়ম (নামাযের মধ্যে যা যা করতে হয় এবং যেভাবে যেভাবে করতে হয়, তার ধারাবাহিক বর্ণনা) + নামাযে মনোযোগ সৃষ্টির টিপস

যখন দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহুদ পড়ার জন্য বসবেন তখন আগে ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বেন, তারপর তাশাহুদ পড়বেন। তাশাহুদের পর তাসবিহ পড়বেন না। তারপর আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য উঠবেন। এরপর তৃতীয় রাকাত ও চতুর্থ রাকাতেও উক্ত নিয়মে ওই তাসবিহ পাঠ করবেন।

কোনো এক স্থানে ওই তাসবিহ পড়তে সম্পূর্ণ ভুলে গেলে বা ভুলে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে কম পড়লে পরবর্তী যে রুকনেই স্মরণ আসুক, সেখানকার সংখ্যার সঙ্গে এই ভুলে যাওয়া সংখ্যাগুলোও আদায় করে নেবেন। আর এই নামাজে কোনো কারণে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হলে সেই সিজদা এবং তার মধ্যকার বৈঠকে ওই তাসবিহ পাঠ করতে হবে না। তাসবিহর সংখ্যা স্মরণ রাখার জন্য আঙুলের কর গণনা করা যাবে না, তবে আঙুল চেপে স্মরণ রাখা যেতে পারে।

শবে বরাতের নামাজের নিয়ত

আপনি যে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে দাড়িয়েছেন মানের মধ্যে এমন ভাব আনলেই আপনার নিয়ত হয়ে যাবে। আরবি, বাংলা যে কোন ভাষাতেই নিয়ত করতে পারেন। বাংলায় নিয়ত করলে এই ভাবে করতে পারেনঃ “শব-ই-বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ/ সালাত কিবলামুখী হয়ে পড়ছি, আল্লাহু আকবর”।

শবে বরাতের নামাজ বিষয়ে শেষ কথা

মনে রাখতে হবে ফরজ নফলের চেয়ে অনেক বড়। শবে বরাতের নামাজ যেহেতু নফল সেহেতু নফল পড়তে পড়তে ফরজ পড়া ভুলে গেলে বা ঘুমের কারণে পড়তে না পারলে কিন্তু সবই শেষ। অর্থাৎ নফল নামাজ পড়ে পড়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন আর এই দিকে ফজরের নামাজ পড়তে পারলেন না। সাবধান এ যেন না হয়। ভাল হয় শবে বরাতের নফল শেষ করে বেতের নামাজ পড়ে এর পর ফজর পড়া। যাই করেন নামাজ পড়েন আর ঘুমান সমস্যা নেই, ঠিক সময় মত উঠে ফজর নামাজ যেন পড়তে পারেন সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।

See also  বিতরের নামাজের নিয়ম + বিতরের নামাজের নিয়ত + বিতরের নামাজের দোয়া + দোয়া কুনুত আরবি, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

শিয়া মতাবলম্বী মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরাও জাকজমকের সাথে এ বিশেষ রাতটি উদযাপন করে থাকেন। মহিমান্বিত ও বরকতময় হিসেবে এ রাত উদযাপনের পাশাপাশি এ পূর্ণিমা তিথিটি শিয়া বিশ্বাসের ১২ ইমামের একজন, ইমাম মাহদির জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। শিয়াগণ বিশ্বাস করেন যে, এ তিথিতেই মুহাম্মাদ মাহদি ধরাধামে এসেছিলেন। শবে বরাত পালনের মধ্যে রয়েছে রোযা, দোয়া-মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠান। শবে বরাতের রাতে ইরানের নগরগুলো আলোকসজ্জায় রাঙানো হয়।

পবিত্র এই রজনীতে মুসলিম ভাই-বোনেরা সারা রাত জেগে নামাজ আদায় করবেন। আত্মীয়-পরিবার-দেশ-জাতির জন্য মঙ্গল কামনা করবেন। আল্লাহর দরবারে দুহাত উঁচিয়ে বিশ্ববাসীর জন্য শান্তি প্রার্থনা করবেন। আল্লাহ্ সব বান্দার দোয়া কবুল করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!